ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

বললেন মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা

জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা বা ফ্ল্যাট থাকছে না

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০২:১১ এএম

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্য এবং জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা বা ফ্ল্যাট দেওয়ার বিষয়ও থাকছে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, বীরপ্রতীক। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহতদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা রাখা হবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেনÑ না, না, কোনো কোটা থাকবে না। তারা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবেন। ফারুক-ই-আজম বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এদের পুনর্বাসনের কর্মসূচিগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুসারে মন্ত্রণালয় যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এই কার্যক্রমের ভেতরে ফ্ল্যাট দেওয়া বা চাকরির কোটা দেওয়া, এসব বিষয় নেই।

তিনি আরও বলেন, পুনর্বাসনের কর্মসূচি আছে, পুনর্বাসন নানাভাবে হতে পারে। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে, যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী যিনি যেভাবে পুনর্বাসিত হতে চান সেভাবে করা হবে। আত্মকর্মসংস্থানের জন্য যদি কেউ হাঁস-মুরগি বা পশু পালন করতে চান বা যেভাবে জীবিকা সংস্থান করতে চাইবেন সরকারের পক্ষ থেকে সে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধারা এখন ভাতা পাচ্ছেন ২০ হাজার টাকা, জুলাই যোদ্ধারাও পাচ্ছেন ২০ হাজার টাকা। দুটো কি সমান হয়ে গেল কি না, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা কি বাড়ানো হবেÑ এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গটা এখানে না আসাই উচিত। মুক্তিযোদ্ধারা মহান। তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এটা সর্বজনীনভাবে প্রযোজ্য। এখানে এই প্রসঙ্গ নিয়ে আসা উচিত না।

তিনি আরও বলেন, ওইভাবে কেউ দেখছে না। আমরাও দেখছি না। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা পেতে ৩০-৩৫ বছর লেগেছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধারা তো ভাতাই পাননি, তালিকাই হয়নি। অথচ ২০০৫ সালেই শহিদের তালিকা হয়েছে। এগুলো সব রেকর্ডেড। তাহলে এত বছর ধরে হলো না কেন? আমি মুক্তিযোদ্ধার প্রসঙ্গ এখানে আনতে চাচ্ছি না।
ফারুক-ই-আজম জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জুলাই শহিদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর মাধ্যমে স্বীকৃতি দিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি ৮৩৪ জন এবং ৩০ জুন আরও ১০ জন সর্বমোট ৮৪৪ জন শহিদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। তিনি জানান, আহত হওয়ার ধরন অনুসারে জুলাই যোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিভুক্ত করে ২৭ ফেব্রুয়ারি ৪৯৩ জন জুলাই যোদ্ধাকে ‘ক’ শ্রেণিতে, ৯০৮ জনকে ‘খ’ শ্রেণিতে এবং ৪ এবং ৫ মার্চ ১,৬৪২ জনকে ‘গ’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ‘ক’ শ্রেণির ১১৪ জন, ‘খ’ শ্রেণির ২১৩ জন এবং ‘গ’ শ্রেণির ১,৪৪২ জন সর্বমোট ১,৭৬৯ জনের তালিকা পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।