নিঃসঙ্গতা দূর করতে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ চালু হয়েছে জাপানে। ‘ওকে গ্রান্ডমা’ নামে একটি সেবার মাধ্যমে চাইলে কেউ একজন দাদি বা নানি ভাড়া নিতে পারেন। রাজধানী টোকিওভিত্তিক সংস্থা ‘ক্লায়েন্ট পার্টনার্স’ এই সেবাটি চালু করেছে, যার আওতায় ৬০-৯৪ বছর বয়সি প্রবীণ নারীরা কাজ করছেন ভাড়াটে দাদির ভূমিকায়।
জাপানের শহরাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে একাকিত্ব। কর্মব্যস্ত জীবনে পরিবার থেকে দূরে থাকা তরুণ-তরুণীরা বা অবিবাহিত ব্যক্তিরা ভুগছেন মানসিক নিঃসঙ্গতায়। এই অবস্থায় অনেকেই খুঁজছেন পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার বিকল্প। ‘ওকে গ্রান্ডমা’ সেই ঘাটতি পূরণে দিচ্ছে একজন অভিজ্ঞ ও ¯েœহময় ‘দাদি’। সেবাটি মূলত ঘরোয়া ও আবেগভিত্তিক নানা প্রয়োজন মেটায়। কেউ রান্না শিখিয়ে দেন, কেউ ঘর গুছিয়ে দেন। কেউ বা শুধু গল্প করেন, সঙ্গ দেন বা সম্পর্কের বিষয়ে পরামর্শ দেন। আবার কেউ যান সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে বা খেলাধুলার আসরে অতিথি হয়ে। অনেকে একে বলছেন ‘ভাড়ায় পাওয়া ভালোবাসা’। পরিষেবার খরচও তুলনামূলকভাবে সহনীয়। প্রতি ঘণ্টায় একজন দাদির ভাড়া ৩,৩০০ ইয়েন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২,৭০০ টাকা।
যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ বাবদ আরও ৩,০০০ ইয়েন লাগে। এই পরিষেবায় উপকার পাচ্ছেন দুই প্রজন্মই। তরুণেরা যেমন ফিরে পাচ্ছেন এক ধরনের মানসিক আশ্রয়, তেমনি প্রবীণ নারীরাও অবসরের পর অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি সমাজে সক্রিয় থাকতে পারছেন। অনেক প্রবীণ বলেন, এই কাজ তাদের জীবনকে আবার অর্থবহ করে তুলেছে। জাপানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। দেশটিতে এখন প্রতি তিনজন নাগরিকের মধ্যে একজন প্রবীণ। এমন জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জে ‘ওকে গ্রান্ডমা’-র মতো উদ্যোগ অনেকেই সময়োপযোগী বলে মনে করছেন।