ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

মিরপুরের উইকেটের সমালোচনায় হেসন

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০৪:০৯ এএম

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইকেট নিয়ে আলোচনা নতুন কিছু নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হোক কিংবা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট-ধীরগতির ও স্পিনসহায়ক এ উইকেট নিয়ে বছরের পর বছর ধরেই হচ্ছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হওয়ার আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস বলেছিলেন, এমন উইকেটে খেলতে খেলতেই অনেকের ক্যারিয়ার ‘ডাউন’ হয়ে গেছে। সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তো আরও আগে স্পষ্ট বলেছিলেন, টানা ১০-১৫ ম্যাচ মিরপুরে খেললে যে কারো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে। মিরপুরের এ উইকেট আবার আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সিরিজে।

দুদলের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর মিরপুরের কঠোর সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান দলের কোচ মাইক হেসন। উইকেট নিয়েও অসন্তোষ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, এমন উইকেট কারো জন্য ভালো। আমার মতে, কেউ যখন এশিয়া কাপ বা বিশ^কাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, এ ধরনের উইকেট তখন গ্রহণযোগ্য নয়। ব্যাট হাতে আমাদের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কোনো অজুহাত নয় এটি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য এ উইকেট মানসম্মত নয়।’ তবে পাকিস্তানের ব্যাটাররা যেখানে ব্যর্থ, সেই একই উইকেটে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে সাবলীল ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের পারভেজ হোসেন ইমন। ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি।

ইমনের মতে, উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা। ইমন বলেন, ‘টি-টোয়েন্টির জন্য উইকেট আদর্শ নয়? এমন কিছু তো মনে হয়নি। দেখুন, আমরা ১১০ রান ১৬ ওভারের মধ্যে করে ফেলেছি। যদি পুরো ২০ ওভার খেলতাম তাহলে ১৬০ রান করতে পারতাম। তাই আমার মনে হয়নি, উইকেট ওরকম কিছু ছিল। হতে পারে ওরা মানিয়ে নিতে পারেনি। আমরা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’ রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরু অবশ্য তেমন ভালো ছিল না। তিন ওভারের মধ্যে ড্রেসিং রুমে ফেরেন তানজিদ হাসান ও লিটন। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান পারভেজ। তুলনামূলক বোলিং সহায়ক উইকেটে কোন পরিকল্পনায় সাফল্য পেলেন সেটিও জানালেন ২৩ বছর বয়সি ওপেনার ইমন। তিনি বলেন, ‘মিরপুরের উইকেটে বোলারদের জন্য একটু সাহায্য থাকেই। এটা নিয়মিত বিষয়। আমরা চেষ্টা করেছি, উইকেট বুঝে যত দ্রুত এখানে সেট হওয়া যায়। এটাই আমাদের পরিকল্পনা ছিল। উইকেটের বাউন্স অসম ছিল না। এক-দুইটা বল হতেই পারে। বোলারদের বুটের কারণে তৈরি হওয়া ক্ষতের কারণে হতে পারে।’ কিন্তু হেসনের ভাবনা অবশ্য ভিন্ন। বিশ^ব্যাপী নানা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা থেকে তার উপলব্ধি, এ ধরনের উইকেটে খেলা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দীর্ঘ মেয়াদে তেমন উপকার করবে না। হেসন বলেন, ‘আমার মনে হয় না, বাংলাদেশের বাইরে গেলে এটি তাদের সাহায্য করবে। তবে এটিও সত্যি এ পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করা খুব চ্যালেঞ্জিং। আপনি জানেন না, ১৩০ না ১৫০, ঠিক কত রান যথেষ্ট হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আপনি যখন বাইরে গিয়ে ভালো উইকেটে খেলবেন, দুর্বলতা প্রকাশ পেয়ে যাবে। তাই আমার মনে হয়, এটি কারো জন্যই ভালো নয়। তবে আবারও বলছি, যেকোনো উইকেটে আমাদের ভালো খেলতে হবে। দল হিসেবে আমরা সেটিরই চেষ্টা করব।’