রাজনৈতিক শোডাউনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরওয়ার আলমগীরের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তুমুল সমালোচনার ঝড় বইছে। এ ঘটনায় দলীয় ভেতরেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে মো. সরওয়ার আলমগীরের নেতৃত্বে আয়োজিত ‘জুলাই-আগস্ট বিজয় শোডাউনে’ ফটিকছড়ি পৌরসভার মালিকানাধীন একটি অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে অংশ নেয়। অ্যাম্বুলেন্সের সামনে থেকে মিছিলে নেতৃত্ব দেন মো. সরওয়ার আলমগীর। শোডাউনে পুরো মিছিলের সঙ্গে সদর এলাকা প্রদক্ষিণ করে অ্যাম্বুলেন্সটি।
এলাকাবাসী মনে করেন, জনগণের করের টাকায় কেনা অ্যাম্বুলেন্সের এই ধরনের ব্যবহারে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার মতো। পৌর এলাকার বাসিন্দা আলী আছার বলেন, ‘এই অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের সেবার জন্য দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের প্রচারে এটি ব্যবহার করছেন, যা অত্যন্ত অনৈতিক’।
পৌরসভার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষার্থীদের দান করা এই অ্যাম্বুলেন্স শুধু রোগী পরিবহনের জন্য নির্ধারিত। রেজুলেশনেও স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছেÑ এটি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা যাবে না এবং কোনোভাবেই ভাড়া দেওয়া যাবে না।
রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অ্যাম্বুলেন্সটিকে শোডাউনে ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করেছি’।
তবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরওয়ার আলমগীর বলেন, ‘বিজয় শোডাউনে যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিতে দলের আহত নেতাকর্মীদের পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। এটি সরকারি না বেসরকারি, তা আমার জানা ছিল না’।
এ বিষয়ে ফটিকছড়ি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
এ ঘটনায় দলের ভেতরেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার বলেন, ‘সরকারি সম্পদ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা অনৈতিক ও দলের জন্য ক্ষতিকর। যারা এটি করেছে তারা দলের ভাবমূর্তিকে আঘাত করেছে’।
দলের আরেকটি অংশের মতে, দেশের ভেতরে বাইরে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ যখন চলছে, তখন এ ধরনের কর্মকা- দলের নৈতিক অবস্থান ও জনসমর্থনকেই দুর্বল করবে।