ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

চার মাস পর আবার বাড়ল মূল্যস্ফীতি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০২:৫৭ এএম

দীর্ঘ সময় পর গত জুনে মূল্যস্ফীতি কমে স্বস্তি ফিরেছিল জনমনে। সে সময় টানা চার মাস ধরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছিল। সেই মূল্যস্ফীতি নতুন করে ফের বাড়ল। জুলাইয়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়েছে। ফলে জুনের ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ থেকে বেড়ে জুলাইয়ে তা হয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

তবে গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত জুন মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জুলাই মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে।

বিবিএস জানায়, গত জুন মাসে দেশের যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল, তা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর পরের মাসেই মূল্যস্ফীতি আবার বাড়ল। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, গত জুলাই মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দুই খাতেই আগের মাসের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গত তিন বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ।

এক বছর আগে অর্থাৎ, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ১৩ বছরের মধ্যে খাদ্যে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ নেয়। এর কিছুটা সুফল মিলছে।
গত দুই-তিন বছর ধরে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এনবিআরও তেল, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যে শুল্ক-কর কমিয়ে দেয়। বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানি প্রবাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এর আগের মাস অর্থাৎ, জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

জুলাই মাসে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত দুই খাতেই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গত মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা জুন মাসে ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি জুন মাসের ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে জুলাইয়ে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ হয়েছে।

তবে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অর্থাৎ, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাধারণ মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যেখানে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত খাতে ছিল ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিবিএস প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে উন্নীত হয়। পরের কয়েক মাস ওঠানামার পর সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসের পর সাধারণ মূল্যস্ফীতি আর দুই অঙ্কের ঘরে ওঠেনি। গত জানুয়ারি মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে কমার মধ্যে গত মাসে আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেড়েছে মূল্যস্ফীতি।