ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

পবিারের মুখে হাসি ফুটাতে গিয়ে লাশ হলেন আকাশ

মো. নাজিম উদ্দিন, মুরাদনগর (কুমিল্লা)
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৪:১১ এএম

অভাবী সংসারে হাসি ফোটানোর আশায় মাত্র ২২ বছর বয়সে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিল কুমিল্লার মুরাদনগরের আকাশ। বিদেশে গিয়ে পরিবারকে সুখ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, বিদেশ বিভুঁইয়ে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় তার। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তার মরদেহ দেশে আনতে পারেনি পরিবার।
নিহত নুর মোহাম্মদ আকাশ সরকার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকোট ইউনিয়নের সোনারামপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও সাহিদা বেগম দম্পতির ছেলে। তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে সৌদি আরবের জিয়াদ এলাকায় একটি পেট্রোল পাম্পে কাজ শুরু করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সেখানে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে প্রাণ হারান আকাশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ‘আকাশের মা সাহিদা বেগম ছেলের কাপড় আর ছবি জড়িয়ে ধরে বুক ফাটানো আহাজারি করছেন। তার কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চারদিক। প্রতিবেশীরা কেউই তাকে সান্ত¡না দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাহিদা বেগম বলেন, ‘আমার আকাশ অভাব দূর করতে বিদেশ গেছিল। কিন্তু আমার কোল খালি কইরা চইলা গেছে। আমার কলিজার লাশটা আইনা দেন, আমি তারে বুকে জড়াইয়া শান্তি পাইতে চাই।’
আকাশের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নয় মাস আগে ছেলে বিদেশে গেছে। ছয় মাস আগে মারা গেছে। এখনো লাশ আনতে পারি নাই। সরকারের কাছে আবেদন, আমার ছেলের লাশটা যেন দেশে আনা হয়।’
আন্দিকোট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নোয়াব আলী সরকার বলেন, লাশ আনার মতো সামর্থ্য পরিবারটির নেই। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি খরচে মরদেহটি দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।’ এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি আগে জানা ছিল না। আজকে জানতে পারলাম। পরিবার লিখিত আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে কুমিল্লা প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার সহকারী পরিচালক আলী হোসেন বলেন, ‘সরকারি খরচে মরদেহ দেশে আনার সুযোগ রয়েছে। দাফনের জন্য লাশের সঙ্গে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। পরে পরিবার আরও ৩ লাখ টাকা পাবে। নিহতের পরিবারের সদস্যদের আমার কাছে পাঠিয়ে দিন, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’