শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০৬:৫০ এএম

গাজায় ইসরায়েলের অভিযান - প্রাণ বাঁচাতে  পালাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০৬:৫০ এএম

গাজায় ইসরায়েলের অভিযান - প্রাণ বাঁচাতে  পালাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা

ভূমধ্য সাগরতীরের ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত গাজার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দার ৯৯ শতাংশই ফিলিস্তিনি মুসলমান। গাজার উত্তর অংশে গাজা সিটি; ইসরায়েলি বাহিনী তার নিয়ন্ত্রণ নিতেই অভিযান শুরু করেছে। এই এলাকায়ই হামাসের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। যে দলটি ইসরায়েলের অভিযান প্রতিরোধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও প্রাণ বাঁচাতে গাজা সিটি থেকে পালাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা।

গাজা সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলি বাহিনী পরিকল্পিত স্থল অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু করার পর ফিলিস্তিনিরা গাজা সিটির কিছু অংশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। গাজা শহরের কাছেই গোলাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেপ্টেম্বরের শুরুতে অভিযান ব্যাপক আকারে শুরু করা হবে বলে ধারণা ছিল। তবে তার আগেই আগস্টের শেষদিকে এসে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এবার গাজার পুরো অংশই দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে ইসরায়েল। সেই লক্ষ্যে গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে গাজা সিটি থেকে পালাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। দুই বছর ধরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পর চলতি মাসের শুরুতে গাজা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুমোদন দেয় ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। সেই অভিযানের অংশ হিসেবে স্থলযুদ্ধ চালাতে ৬০ হাজার রিজার্ভ ফোর্স তলব করা হয়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফের পরিকল্পনাও গত মঙ্গলবার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়। বর্তমানে গাজা সিটির কাছের জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েল সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে বোমা হামলা এবং গোলাবর্ষণ শুরুর পর শহরের উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়েছে। এতে জেইতুন ও সাবরা এলাকা থেকে শত শত ফিলিস্তিনি উত্তর-পশ্চিম দিকে পালিয়ে যাচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত অবিরাম গোলাবর্ষণের শব্দ শোনার কথা জানিয়ে গাজা সিটির বাসিন্দা আহমাদ আল-শান্তি এএফপিকে বলেন, ‘রাতভর আমাদের বাড়ি কেঁপে কেঁপে উঠছিল-বিস্ফোরণ, গোলাবর্ষণ, যুদ্ধবিমান, অ্যাম্বুলেন্স আর সাহায্যের জন্য কান্নার শব্দে।’ মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আওয়াজ ক্রমেই আমাদের আরও কাছে আসছে। কিন্তু আমরা কোথায় যাব।’ 

আমাল আবদেল-আল নামে এক ফিলিস্তিনি এক সপ্তাহ আগে সাবরা থেকে পালিয়ে গাজায় এসে আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় কেউ ঘুমায়নি, গত রাতেও না, গত এক সপ্তাহেও না। গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা থামছেই না।’

এদিকে সৈন্যরা এরই মধ্যে জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় অবস্থান মজবুত করে অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে ইসরায়েলের আইডিএফ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি দেফরিন গত বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘২২ মাসের যুদ্ধের পর হামাস এখন বিধ্বস্ত এবং ক্ষতবিক্ষত। আমরা গাজা সিটিতে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেব।’ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই অভিযানের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে হামাসকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘গাজা সিটি হলো সন্ত্রাসীদের শেষ ঘাঁটি।’

এদিকে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, নেতানিয়াহু আসলে গাজা শহরের নিরীহ বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে একটি ‘পাশবিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যস্থতাকারীদের নতুন উদ্যোগে সাড়া না দেওয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনাও করেছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটি। 

অন্যদিকে কাতার ও মিসর একটি চুক্তিতে দুই পক্ষকে রাজি করাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় এখনো আটকে থাকা ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মির প্রায় অর্ধেককে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। হামাস এমন চুক্তিতে রাজি হলেও তেল আবিব এখনো আনুষ্ঠনিক কোনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা আর কোনো আংশিক চুক্তিতে যাবে না, বরং সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে।

সম্পূর্ণ গাজা দখলের পরিকল্পনায় ইসরায়েলের মিত্র অনেক দেশ এখন নিন্দা জানাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ গত বুধবার সতর্ক করে বলেছেন, ‘এটা উভয় পক্ষের জনগণের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং পুরো অঞ্চলকে একটি স্থায়ী যুদ্ধের চক্রে ফেলার ঝুঁকি তৈরি করবে।’ রেড ক্রস এরই মধ্যে সতর্ক করে বলেছে, ‘গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষ এখনই বিপর্যয়ের মধ্যে আছে, নতুন করে অভিযান তা চরম করে তুলবে।’

গাজায় হামাসের হাতে বন্দি থাকা ৫০ জন জিম্মিকে অক্ষত অবস্থায় মুক্ত করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে অন্য জিম্মিদের পরিবারের আশঙ্কা, ইসরায়েলের অভিযান আটকে থাকা তাদের স্বজনদের জীবন ঝুঁঁকির মধ্যে ফেলে দেবে।  

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আরও ধ্বংস ও মৃত্যু এড়াতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে জিম্মি থাকা ইসরায়েলিদের মুক্তি দিতে হামাসের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই দিনে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। এতে বলা হয়েছে, গত বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলা ও অনাহারে অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, তারা গাজার সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্র গাজা সিটি দখলের লক্ষ্যে অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু করেছে। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!