ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে পল্টনে ফের সড়ক অবরোধ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ০৮:৫৩ এএম
নুরুল হক নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে পল্টন মোড় অবরোধ করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে বিজয়নগরের আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে পল্টন মোড়ে যান। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বিচার অবশ্যই হতে হবে। এই হামলা শুধু নুরুল হক নুরের ওপর নয়, এটা গণঅভ্যুত্থানের ওপর হামলা। সুতরাং, নুরুল হক নুরের ওপর হামলার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের দল নয়। এরা ভারতের দল। আপার মতো জাপাকেও (জাতীয় পার্টি) ভারতে পাঠাতে হবে। একপর্যায়ে তারা রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকে। 

এ সময় চারপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা বলেন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। এ সময় তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’, ‘আপা গাছে যেই পথে, জাপা যাবে সেই পথে’, ‘ভিপি নুরের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। 

রাশেদ খান বলেন, ‘রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা গ্রেপ্তার হলে জি এম কাদের কেন গ্রেপ্তার হয় না? কারা কাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে? এবার কিন্তু জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানানোর কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট হিসেবে নিষিদ্ধ হয়েছে, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।’ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য’র ব্যানারে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টায় শাহবাগ জাদুঘরের সামনে সংহতি সমাবেশ। এই সমাবেশ আমাদের ঐক্য প্রতিষ্ঠার সমাবেশ। আমাদের মধ্যে ঐক্য না থাকলে আওয়ামী লীগ আবারও ফিরে আসবে। আমরা বিভাজিত হওয়ার সুযোগে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি অংশ এভাবে হামলার সুযোগ পেয়েছে। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না। সরকার শুধু সহানুভূতি দেখিয়ে মাফ পাবে না। দোষীদের বিচার করতে হবে। এই ঘটনার বিচার না হলে পুরো বাহিনীকে কলুষিত করা হবে। কিন্তু আমরা বারবার বলছি, আমরা পুরো বাহিনী দুটিকে দোষারোপ করতে চাই না।’ তিনি বলেন, আজকের এই অবরোধের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। ঠান্ডা কথা সরকারের কানে ঢোকে না, যে কারণে সড়ক অবরোধ করেছেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে, জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল। আলতাব আলী পার্কে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মানবাধিকার সংগঠনটির সেক্রেটারি বুরহান উদ্দিন চৌধুরীর পরিচালনায় এবং সভাপতি রায়হান উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটসের আহ্বায়ক শমসুল আলম লিটন। সমাবেশ থেকে তারা বলেন, নুর জুলাই আন্দোলনের একজন অগ্রণী সেনা। ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত তার ওপর ডজনখানেক হামলা হয়েছে। সর্বশেষ ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তার ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলা করেছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালালেও এখনো প্রশাসনের ভেতরে অওয়ামী লীগের লোকজন দৃশ্যমান, যার ফলে জুলাই আন্দোলনের এই নেতার ওপর হামলা।