ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ডিএসসিসিতে অভিযান

জ্বালানির ভুয়া খরচ দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৫:১৫ এএম
ডিএসসিসি

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের কারণে মে ও জুন মাসে ৪০ দিন কার্যক্রম বন্ধ ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী, এ সময় ডিএসসিসির অনেক কর্মকর্তা অফিসে না থাকলেও তাদের জন্য বরাদ্দ করা গাড়ির বিপরীতে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ লিটার তেল খরচ দেখানো হয়েছে। প্রতি মাসের মতো তখনো জ্বালানি খাতে খরচ দেখানো হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। গতকাল রোববার দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ডিএসসিসিতে অভিযান চালায় দুদকের সহকারী পরিচালক ইকরাম হোসেনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল।

সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এখানে ড্রাইভার থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত দুর্নীতিতে জড়িত। আর সংশ্লিষ্ট পরিবহন বিভাগ এ বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেনি। অভিযানের সময় পরিবহন শাখার মহাব্যবস্থাপককে পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্শেদ বলেন, গরমিলের কারণ জানাতে পারবেন কেবল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

দুদক বলছে, অভিযোগ হলো, ডিএসসিসির কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত সরকারি গাড়ি বাস্তবে ব্যবহার না হলেও কাগজপত্রে জ্বালানি খরচের ভুয়া বিল দেখিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ উত্তোলন করা হয়। পরে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। দুদকের আভিযানিক দল জানায়, জব্দ করা নথি বিশ্লেষণ করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এর ভিত্তিতেই নেওয়া হবে পরবর্তী পদক্ষেপ। 

জানতে চাইলে দুদকের সহকারী পরিচালক ইকরাম হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এদিন দুর্নীতিসংক্রান্ত বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনের পর অভিযান চালিয়ে এই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে। তারা এখন কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবেন। কমিশন পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। দুদকের অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, দুদক অভিযান চালিয়ে অনেক নথি নিয়ে গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মচারীর আন্দোলনের কারণে চলতি বছরের ১৪ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ৪০ দিন নগর ভবনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সংস্থাটিতে প্রতি মাসে জ্বালানি খাতে খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এপ্রিল, মে ও জুন মাসের খরচ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মে ও জুন মাসে নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ থাকলেও খরচ হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের সমান তেল। অথচ এই সময়ে কার্যত কোনো অফিস কার্যক্রম ছিল না। এ ধরনের কার্যকলাপ সরাসরি দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।