বিলম্বে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে ভ্যাটের পরিমাণও বাড়াতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হয়। নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ না করলে ৫ শতাংশ হারে সারচার্জ (বিলম্ব মাশুল) আদায় করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চায় বিলম্ব মাশুলের মতো ভ্যাটের পরিমাণও বাড়াতে। তবে এই টাকা গ্রাহকের ওপর বসবে নাকি সারচার্জের ওপর বসাতে চায়, সে বিষয়ে জানা যায়নি।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) একটি বিলে দেখা গেছে, এনার্জি চার্জ, ডিমান্ড চার্জ এবং মাদার মিটারের সিস্টেম লসের উপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় আরোপ করা হয়েছে। আর নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ না করলে মোট বিলের উপর ৫ শতাংশ হারে সারচার্জ (বিলম্ব মাশুল) দিতে হচ্ছে। এখানে বিলম্বে পরিশোধের ক্ষেত্রেও ভ্যাটের পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকছে। রাজস্ব বোর্ডের নতুন চাওয়া বাস্তবায়ন হলে বিলম্বে বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে ভ্যাটের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে। রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে এক বৈঠকে বিষয়টি তোলা হয়েছে। তবে এখনও বিষয়টি বাস্তবায়ন স্তরে কোন চিঠি পত্রের খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জেনারেল ম্যানেজার (কর্মাশিয়াল) নুরুল আফসার সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে আমি অবগত না। আমাদের কাছে সাধারণ চিঠি আসে একবারে বাস্তবায়ন পর্যায়ে আদেশ হওয়ার পর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবু ফারুক বলেন, কোন পদ্ধতিতে আদায় করা হবে সেটি না জেনে কথা বলা কঠিন। তবে সারচার্জ কমবেশি করার এখতিয়ার পিডিবির হাতে নেই। সারচার্জে কাটাছেড়া করতে হলে বিইআরসিতে আবেদন নিয়ে যেতে হবে। কারণ সারচার্জ নির্ধারিত হয়েছে বিইআরসির আইনের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে সারচার্জে পরিবর্তন আনতে গেলে বিইআরসির কাছে আসতে হবে।
সারা দেশে বিদ্যুৎ বিতরণে ৪টি বিতরণ কোম্পানি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং পিডিবি কাজ করছে। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী মোট গ্রাহকের সংখ্যা ৪ কোটি ৮৬ লাখ। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে পরিচালিত ৮০টি সমিতির গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৭১ লাখ।