ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৫

বজ্রপাতে দেশের বিভিন্ন  স্থানে আটজনের মৃত্যু

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০৩:৪৯ এএম

দেশের বিভিন্ন জেলায় বজ্রপাতে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। রংপুর, যশোর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, নোয়াখালী ও গোপালগঞ্জে বজ্রপাতে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লায় বজ্রপাতে আগুন লেগে একটি বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। মৃতদের অধিকাংশই মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন।

রংপুর:

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জ্যোতিডাঙ্গা বিলে গতকাল বুধবার সকালে বজ্রপাতে মারা যান মিজানুর রহমান (৩৫)। সকালে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে মাছ ধরতে বিলে নামেন তিনি। কিছুক্ষণ পর বজ্রপাতের শব্দে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

যশোর:

সকালে যশোর সদর উপজেলার গাইদগাছি গ্রামে মাছের ঘেরে বজ্রপাতে মারা যান বিএনপি নেতা আবদুল হাকিম সরদার (৬৫)। তিনি বসুন্দিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। একই জেলার কেশবপুরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাছের ঘেরে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা যান কৃষিশ্রমিক শামীম হোসেন (২৫)। বজ্রপাতে আহত হওয়ার পর তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার চর সাহেবের আলগা ইউনিয়নের সাহেবের আলগা গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে বজ্রপাতে কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন (৪২) ও তার স্ত্রী রুবি বেগম (৩৫) মারা যান। সন্ধ্যার দিকে প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সময় টিনের ঘরের ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ করেই মা-বাবাকে হারিয়ে সন্তানরা এতিম হলো। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

রাজশাহী:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দানগাছি গ্রামে গতকাল সকালে খালে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান ফজেল আলী (৩৯)। সকাল ৭টার দিকে টিপ টিপ বৃষ্টির মধ্যে মাছ ধরার সময় বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

নোয়াখালী:

নোয়াখালী সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নে মঙ্গলবার রাতে ধানখেতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান দিনমজুর মো. সাঈদ হোসেন (২৯)। রাতে তিনি বাড়িতে ফেরেননি। সকালে স্থানীয়রা ধানখেতে তার মরদেহ দেখতে পান।

গোপালগঞ্জ:

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার লখন্ডা গ্রামে মঙ্গলবার রাতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান সমীর বাড়ৈ (৩৫)। রাতে মাছ ধরতে বের হয়ে তিনি আর ঘরে ফেরেননি। সকালে পরিবারের সদস্যরা বিলে গিয়ে তার দেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কুমিল্লায় বজ্রপাতে ঘরে আগুন:

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামে মঙ্গলবার বিকেলে বজ্রপাতে সিরাজুল ইসলাম মোল্লার বসতবাড়িতে আগুন ধরে যায়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে বসতবাড়ি ও গৃহস্থালির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০ লাখ টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুমে বজ্রপাতের প্রবণতা বেড়ে যায়। খোলা জায়গায় বা জলাশয়ে অবস্থান এ সময় প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ, পুকুর, খাল-বিল ও উঁচু গাছপালা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।