চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ট্যারিফ কার্যকর হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়ে অচলাবস্থার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্দরে ভারী যানবাহনের প্রবেশ ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করায় কনটেইনার পরিবহন বন্ধ রেখেছেন ট্রেইলার মালিকেরা।
গত ১৫ অক্টোবর নতুন মাশুল কার্যকর হওয়ার পর থেকেই বন্দরে পণ্য পরিবহনে স্থবিরতা দেখা দেয়। কিছু কিছু প্রাইম মুভার ও ট্রাক বন্দর থেকে কনটেইনার পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বিভিন্ন অফডক বা ডিপোর ট্রেইলার চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর একটি কনভেনশন হলে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় ‘এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন ট্যারিফ সমস্যার সমাধান না হলে চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী।
একই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘এটা কর্মবিরতি বা ধর্মঘট নয়। ৫৭ টাকার পাস ২৩০ টাকা করায় গাড়ি চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে। সকাল থেকে বন্দরে কোনো পরিবহন প্রবেশ করছে না। বাড়তি টাকার বোঝা শ্রমিক নেবে নাকি মালিক, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্দরে চালকদের জন্য কোনো ওয়াশরুম, ক্যান্টিন নেই। তিন ধরনের ট্যাক্স দেওয়ার পরও এখন নতুন করে ফি বাড়ানো হয়েছে, যা অযৌক্তিক।’
বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি ও পোর্ট ইউজার্স ফোরামের নেতা এম এ সালাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণ। এটি লোকসানে নয়, প্রতি বছর আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা লাভ করে। তার পরও ট্যারিফ বাড়ানো হচ্ছে কেন? ট্রেইলার বন্ধ হয়ে গেলে কনটেইনার পরিবহন পুরোপুরি থেমে যাবে।’
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪৪০ শতাংশ পর্যন্ত ট্যারিফ বাড়িয়েছে। পাইলটিং ও পোর্ট ডিউজসহ নানা খাতে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হচ্ছে। এটি কস্ট-বেইজড না হয়ে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে শিল্প-বাণিজ্যে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে।’
নতুন ট্যারিফ কার্যকরের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থার শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। ব্যবসায়ী ও মালিকপক্ষের দাবি, আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এই জটিলতার সমাধান না হলে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন