রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জুবেল আহমদ, ওসমানীনগর (সিলেট)

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০১:২০ এএম

সিলেট-২ আসন

দুঃসময়ের লুনাকেই প্রার্থী চান ভোটাররা

জুবেল আহমদ, ওসমানীনগর (সিলেট)

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০১:২০ এএম

দুঃসময়ের লুনাকেই  প্রার্থী চান ভোটাররা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। দলের দুই শীর্ষ মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের সমর্থকদের মধ্যকার পাল্টাপাল্টি অবস্থান এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আজ রোববার সিলেট জেলার ৬টি আসনসহ বিভাগের ১৯টি আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে কেন্দ্রে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠক নিয়ে সিলেট-২ আসনের বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনার ঝড়। ঢাকায় বিএনপির হাইকমান্ডের এ বৈঠকে সিলেটের সব মনোনয়নপ্রত্যাশীকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেখানেই ধানের শীষের চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারণ হতে পারে বলে জানা গেছে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মনোনয়নপ্রত্যাশী তাহসিনা রুশদীর লুনা ও হুমায়ুন কবির দুজনেই। বৈঠকে যে পাবেন গ্রিন সিগন্যাল, তাকেই আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে।

কে হচ্ছেন ধানের শীষের কা-ারি এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। তবে সব জল্পনা কাটিয়ে লুনার হাতে ধানের শীষ উঠবেÑ এমনটা আশা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। কেননা ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর কঠিন দুঃসময়ে একমাত্র রাজনৈতিক অভিভাবককে হারিয়ে কর্মীরা যখন দিশাহারা, ঠিক তখনই কর্মীদের ছায়া হয়ে পাশে দাঁড়ান ইলিয়াসের সহধর্মীণি তাহসিনা রুশদীর লুনা।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সিলেট-২ আসনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির হাল ধরে আছেন তিনি। রাজনীতিতে নিজেকে প্রমাণ করতে দিয়েছেন নানা পরীক্ষাও। ইলিয়াস আলীর অবর্তমানে সিলেট-২ আসনের দখলে বসে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কিন্তু লুনা আওয়ামী লীগের সেসব দুর্গ ভেঙে দিয়ে সিলেট-২ আসনে নতুন করে পদচারণ শুরু করেন।  এর পর থেকে লুনাই এই অঞ্চলের বিএনপির ভরসা। হামলা, মামলা ও নির্যাতনের মধ্যেও তিনি নেতাকর্মীদের একত্রিত রেখেছেন। দুর্দিনে মাঠে ছিলেন, আন্দোলনের প্রতিটি ধাপে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফলে স্থানীয়ভাবে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা দুটোই তুলনামূলক বেশি।  দুই উপজেলায় অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছেন লুনার। তা ছাড়া সাধারণ মানুষের মনে আছে এম ইলিয়াস আলীর প্রতি অগাধ ভালোবাসা।  নিখোঁজ হলেও ইলিয়াস আলীর রয়েছে নিজস্ব ভোটব্যাংক।

অন্যদিকে হুমায়ুন কবির মূলত প্রবাসী ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। মাঠপর্যায়ে ততটা পরিচিত না হলেও তিনি ধীরে ধীরে নিজের অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন । ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকায় এসে প্রচারণা শুরু করেন। তার সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশের যোগাযোগ  রয়েছে, তবে তাদের সংখ্যা কম। তার সঙ্গে থাকা বড় অংশটি হচ্ছে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতাকর্মী। তাদের নিয়ে মিছিল-মিটিং করছেন তিনি। এ নিয়ে দুই উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্বনাথে লুনা ও হুমায়ুনপন্থী কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। গত ৯ অক্টোবর রাতে বাসিয়া ব্রিজ এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

এদিকে সাধারণ মানুষ মনে করছেন, আজকের বৈঠকে হাইকমান্ড মাঠ জরিপ, তৃণমূল মতামত ও রাজনৈতিক প্রভাব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। জানা যাবে, ধানের শীষ হাতে পাবেন লুনা, নাকি নতুন মুখ হুমায়ুন কবির। মাঠপর্যায়ের চিত্র বিভক্ত। লুনার প্রতি রয়েছে নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের আস্থা ও আবেগ। লুনা দুঃসময়ের নেত্রী, তাকে মনোনয়ন দিলে কর্মীদের উৎসাহ দ্বিগুণ হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এখন ‘লুনা ছাড়া বিকল্প ইেনষ্ফ স্লোগান ছড়িয়ে পড়েছে। লুনার দীর্ঘ রাজনৈতিক উপস্থিতি, ইলিয়াস পরিবারের জনপ্রিয়তা ও সংগঠনের প্রতি ত্যাগ তাকে এগিয়ে রেখেছে। তবে হুমায়ুন কবিরের প্রবাসী সংযোগ, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠতা এবং কেন্দ্রীয় লবিংয়ের প্রভাবও বিবেচনায় রাখছেন স্থানীয়রা। নতুন নেতৃত্ব তৈরি এবং বহুমাত্রিক যোগ্যতার কারণে হুমায়ুনের ওপরও আস্থা আছে অনেকের। দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে তোলা, ভোটারদের আরও আগ্রহী করে তোলার জন্য দুজনের মাঠের তৎপরতা দলের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।

ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবির আহমেদ বলেন, যখন দলের কেউ মাঠে ছিল না তখন লুনা ছিলেন, আমরা তাকে একনিষ্ঠ নেত্রী হিসেবে জানি। দলের দুঃসময়ে আমরা যাকে পেয়েছি সুসময়ে আমরা তাকেই চাই।

ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমেদ বলেন,  সিলেট-২ আসন ঐতিহাসিকভাবে আমাদের নেতা এম ইলিয়াস আলীর পরিবারের, মাঠ জরিপেও লুনার অবস্থান শক্তিশালী। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত আমাদের নেত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনার পক্ষেই আসবে ইনশা আল্লাহ। তবে সবার ওপরে দল।

ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিসবাহ বলেন,  দলীয় হাইকমান্ড ভোটের মাঠ জরিপ, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মতামত যাচাই করলে তাহসিনা রুশদীর লুনা এগিয়ে। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা কেউ নেই।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!