ঢাকা রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি

অধিভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান চান ২৫ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্তরা 

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০১:০২ এএম

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত কাঠামো নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রাজধানীর সাত কলেজকে রক্ষার জন্য একটি অধিভুক্তিমূলক বিশ^বিদ্যালয় (জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের মতো) গঠনে মত দিয়েছেন ২৫ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে বিরাজমান সংকট মোকাবিলায় শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের আলোকে এবং অংশীজনদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন তারা।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ’-এর কর্মকর্তা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দেখভাল করার লক্ষ্যে ১৯৮০ সালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার গঠিত হলেও শিক্ষা বিষয়ের নীতিনির্ধারণে তাদের কোথাও রাখা হয় না। ফলে স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরে এসেও দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই অসন্তোষ দেখা যায়। দেশের প্রবীণ নাগরিক হিসেবে এ বিষয়ে আমাদের কথা বলা দরকার বলে মনে করি। কেননা শিক্ষাই হচ্ছে একটি দেশের সব উন্নয়নের চাবিকাঠি।

তারা বলেন, ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজ নিয়ে শিক্ষা খাতে নতুন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ সাতটি কলেজসহ সারা দেশের সব কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। কোনো ধরনের স্টাডি ছাড়াই কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু নানাবিধ সংকটের কারণে ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে, যেখানে শিক্ষা ক্যাডারের কাউকে রাখা হয়নি। মূল স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) এড়িয়ে গিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করায় সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। নিজেদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। কেউ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, কেউ বিপক্ষে। এ ছাড়া একটি মহল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের লোভ দেখিয়ে নিজেদের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন বলেও শোনা যায়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদের পক্ষে বলা হয়, প্রশাসন ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত ও প্রয়াত মিলে প্রায় ৭৭৮ কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ বাকি ২৫টি ক্যাডারের বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত মাত্র ৭২ কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তারা ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত সব কর্মকর্তার আবেদন পুনর্বিবেচনা এবং প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো ভূতাপেক্ষ বেতনভাতাসহ সব আর্থিক সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এবং বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি স ম গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এম এ সামাদ প্রমুখ।