পুরান ঢাকায় বাসার সিঁড়িতে আবারও এক শিক্ষার্থীর লাশ পাওয়া গেছে। গত শনিবার বিকেলে বংশালের আগামাসি লেনের একটি বাসার চারতলার সিঁড়ি থেকে গলায় জিআই তার পেঁচানো অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহত শিক্ষার্থীর নাম সজিব, সে স্থানীয় বংশাল আহমেদ বাউনিয়া স্কুল ও কলেজ থেকে চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল।
গতকাল রোববার বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দুলাল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এদিন বিকেলে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। চারতলার সিঁড়িতে গলায় জিআই তার পেঁচানো অবস্থায় লাশটি উপুড় হয়ে পড়ে ছিল। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হলেও পরে মোবাইলের সূত্রে পরিচয় শনাক্ত হয়।
এসআই দুলাল আরও জানান, ওই ভবনের চারতলায় শুধু একটি পরিবার থাকত। পুরো ভবনটি গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ঘটনাস্থলের ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষার্থীকে গলায় জিআই তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে, বলেন তিনি।
ঢামেক হাসপাতালে নিহতের চাচাতো ভাই মো. ইসলাম জানান, সজিবদের বাসা বংশালের আগামাসি লেনেই। সে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তবে অকৃতকার্য হয়। কিছুদিন আগে তাবলিগের সঙ্গে দোহারে গিয়েছিল। গত শুক্রবার বাসায় ফিরে আসে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে একটি ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হয়। বিকেলেই জানতে পারি, একটি বাসার সিঁড়িতে তার লাশ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, যে বাসায় সজিবের লাশ পাওয়া গেছে, সেখানে চারতলায় তার প্রেমিকার পরিবার থাকত। ঘটনার পর থেকে তাদের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। সজিবের সঙ্গে মেয়েটির ছয় বছর ধরে সম্পর্ক ছিল। মাঝেমধ্যে মনোমালিন্য হলেও সম্প্রতি সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। তবে মেয়েটির মামারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। সজিবের পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়ের দুই মামাÑ ইকবাল ও কামাল পরিকল্পিতভাবে সজিবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবরও পুরান ঢাকার একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই এলাকায় দুই তরুণের এভাবে মৃত্যু পুরান ঢাকায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

