ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

মানুষের সঙ্গে কানেক্টেড হওয়ার মতো কিছু একটা পাওয়া গেছে

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০৩:১৮ এএম

এক চুমুক উষ্ণতা নিয়ে আলতো করে ইতিহাসের ছিটকিনি খুলে ঘুরে আসা যাক ষাটের দশকের গোড়া থেকে। তখনই পাশ্চাত্যে আলোড়ন তুলেছিল সালসা সংগীতের কিংবদন্তি ইসমায়েল কুইনতানার তুমুল জনপ্রিয় গান ‘ক্যাফে’ স্প্যানিশ ভাষায় (ক্যাফে তোস্তাও ই কোলাও)। গানটি গভীরভাবে নাড়া দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলির অশ্বারোহী গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে। সেই প্রেরণাতেই জন্ম নেয় বাংলা গান ‘ক্যাফে’ বা ‘আমার প্রিয়া ক্যাফে’। এরপর ব্রহ্মা-ে কেঁপে কেঁপে বয়ে গেল নানা কা- আর শূন্যতার ইতিহাস। এবার সেই প্রজন্ম পেরোনো সুরকে নতুনভাবে জীবন্ত করে তুলেছে কোক স্টুডিও বাংলা। গেয়েছেন আভাস ব্যান্ডের তানযীর তুহীন, সঙ্গে রয়েছেন গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে গাবু ও ব্রাজিলিয়ান শিল্পী লিভিয়া মাতোস। গানে একসঙ্গে মিলেছে আফ্রো-কিউবান জ্যাজ, লাতিন সালসা এবং বাংলা পঙ্ক্তি। কোক স্টুডিওর ভাষায় ‘নস্টালজিয়ায় মোড়ানো হাজারো গল্পের অ্যালবাম ‘ক্যাফে’। তুহিনের কণ্ঠ, শুভেন্দুর সংগীতায়োজন, লিভিয়ার অ্যাকর্ডিয়ন আর গাবুর রিদমে সেই গল্পগুলো যেন আবারও জেগে উঠেছে।’ তবে শ্রোতাদের মধ্যে আন্তঃসংস্কৃতিক সুরমিলন, আয়োজন ও আবেগের ভারসাম্য নিয়ে দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এসব আলোচনার ফাঁকে গানের অনুভূতি ও শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে এক সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে মত প্রকাশ করেছেন সংগীতশিল্পী তানযীর তুহীন। তুলে ধরেছেন আরফান হোসাইন রাফি

শিরোনামহীনে ‘ক্যাফেটেরিয়া’ এবং কোক স্টুডিও বাংলার ‘ক্যাফে’ কেমন লাগে এসব কফি হাউসের দিনগুলো?

এটা এককথায় বলতে গেলে নস্টালজিক! খুব আনন্দের। ‘ক্যাফেটেরিয়া’ নিয়ে আমার অনেক স্মরণীয় স্মৃতি আছে। সবার প্রিয় আড্ডার জায়গা এটি। পড়াশোনার বাইরে জীবনের প্রায় সব গল্পই জমে ওঠে এখানে।

কোক স্টুডিওর সঙ্গে অভিজ্ঞতা জানতে চাই

কোকের পক্ষ থেকে শায়ান চৌধুরী অর্ণব আর শুভেন্দু দাস শুভ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ওদের সঙ্গে কথা বলে কাজটা করা হলো। সবকিছু খুব সুন্দরভাবে গোছানো ছিল। সবার আন্তরিকতা ছিল। সবাই মিলে চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার।

এই গানের পরিকল্পনা কীভাবে হয়েছিল?

কোকের পক্ষ থেকে গান করার প্রস্তাব আসার পর শুভেন্দু শুভ আর অর্ণবের সঙ্গে বসে কথা হলো। তারা জানল, মহীনের ঘোড়াগুলির গান ‘আমার প্রিয়া ক্যাফে’-এর সঙ্গে স্প্যানিশ ক্যাফে গানটির কিছু অংশ যুক্ত হবে। এ ছাড়া মহীনের ঘোড়াগুলির প্রতিষ্ঠাতা গৌতম দা (গৌতম চট্টোপাধ্যায়)-এর ছেলে গাবু (লক্ষ্মীছাড়া ব্যান্ডের ড্রামার ও ভোকালিস্ট) থাকবেন। তারপর কাজটি করা হলো।

গানটি প্রকাশ পাওয়ার পর কেমন লাগছে?

আলহামদুলিল্লাহ, ভালো লাগছে। প্রতিটি গান প্রকাশের পর যেমন একটা আনন্দ কাজ করে, ঠিক তেমনি আনন্দ লাগছে। মানুষের সঙ্গে কানেক্টেড হওয়ার মতো কিছু একটা পাওয়া গেছে।

সামাজিক মাধ্যমে শ্রোতাদের ভালো-মন্দ মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারো কারো ধারণা, গানটিতে আয়োজনের দিক কিংবা ব্রাজিলিয়ান শিল্পী লিভিয়া মাতোস এবং গাবুর কম্বিনেশন তুহীন ভক্তদের মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে..

একেকটা গান একেক রকম হবে। একটা গান নতুন করে বের হয়েছে, তাই শুনে শুনে অভ্যস্ত হতে সময় লাগবে। এটা সময়ের ব্যাপার। একদিনের মধ্যেই এতো মন্তব্য আসলে... নিজেকে আশ্বস্ত করতে সবাই একটু সময় নিক। সময় নেই আমরা।

‘ক্যামেরা’ প্রকাশের দুই বছর পর ‘আভাস’র ‘সত্তা’ প্রকাশ পেয়েছে। ভক্তদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

আলহামদুলিল্লাহ, সব গানের মতোই ভক্তদের কাছ থেকে বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি।

‘সত্তা’র পর ‘আভাস’র নতুন গান কবে আসবে?

নতুন গানের কাজ হচ্ছে। ‘সত্তা’র পরপরই ‘আভাস’-এর আরও দুটি নতুন গানের কাজ চলছে। ইনশাআল্লাহ, সময় হলে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া হবে।

ভক্তদের জন্য ‘আভাস’র বার্তা

নতুন কোনো বার্তা নেই। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর একটা দেশের জন্য দোয়া করবেন। নিজ নিজ কাজ করবেন। ইনশাআল্লাহ, আমরা একসঙ্গে হৈচৈ করে কাজ করে এগিয়ে যাব।