ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

কুমিল্লায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে ড. মোস্তাফা হাজেরা ফাউন্ডেশনের বিনা মূল্যে সেবার অ্যাম্বুলেন্সে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার সময় অ্যাম্বুলেন্সটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নোয়াখালীগামী এক রোগীর মৃতদেহ বহন করছিল। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গ্রেটার নোয়াখালী ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন।

গতকাল রোববার দুপুরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার একটি রেস্টুরেন্টে গ্রেটার নোয়াখালী ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এ সময় সংগঠনটির মুখ্য সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘এটি কেবল একটি মানবিক সেবার ওপর আঘাত নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে এক জঘন্য ও লজ্জাজনক ঘটনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় রোগী পরিবহনের পথে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে ড. মোস্তাফা হাজেরা ফাউন্ডেশনের বিনা মূল্যে সেবার অ্যাম্বুলেন্সটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই রোগীকে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তার রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মৃতদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি নোয়াখালীতে ফেরার প্রস্তুতির সময় কুমিল্লার কিছু কুচক্রী ব্যক্তি নোয়াখালীর অ্যাম্বুলেন্স বলে চালক ও স্বজনদের ওপর শারীরিক হামলা চালায়। আহত চালক পরে সাহসিকতার সঙ্গে মৃতদেহটি নিরাপদে নোয়াখালীতে ফিরিয়ে আনেন।’

জহিরুল ইসলাম এই হামলাকে দুই জেলার ঐতিহাসিক সম্প্রীতি নষ্টের একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করে বলেন, ‘ড. মোস্তাফা হাজেরা ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক মানবিক প্রতিষ্ঠান, যা গত এক দশক ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তার মাধ্যমে দেশের নানা প্রান্তে সেবা দিয়ে আসছে। এই প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবীরা কোভিড, বন্যা ও বিভিন্ন দুর্যোগে কুমিল্লা, ফেনী, সিলেট ও নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় সম্মুখ সারিতে কাজ করেছে।’

ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানান জহিরুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে সরকারকে দ্রুত স্বতন্ত্র ‘নোয়াখালী বিভাগ’ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার বিপক্ষে নই, বরং দুই জেলার উন্নয়নই পরস্পরের পরিপূরক। নোয়াখালী ও কুমিল্লা উভয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে হবে।’ তবে ভুলুয়ার সীমারেখার ভৌগোলিক অবস্থান বর্তমান নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলার সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও আঞ্চলিক পরিবেশ বিবেচনা করে স্বতন্ত্র নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানান জহিরুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে সোনাইমুড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি বেলাল ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আল মাহমুদ, সাবেক সভাপতি শামছুল আরেফিন জাফর, সোনাইমুড়ি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাকসুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।