ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

জামায়াতসহ ৮ দলের সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:২৯ এএম

জুলাই সনদ, পিআর থেকে সংস্কার ইস্যুতে গেল আট মাস রাজনৈতিক দলগুলো ছিল আলোচনার টেবিলে। তবে সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চূড়ান্ত ঐক্য গড়তে ব্যর্থ হয় দলগুলোর মধ্যে। যার ফলে চলতি নভেম্বরে রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে শক্ত অবস্থানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলো। এ পরিস্থিতিতে দলগুলোর মাঠের কর্মসূচি রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আজ মঙ্গলবার জামায়াতসহ যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া আট দল পল্টনে গণসমাবেশ করছে। তারা জানান, গণভোটসহ ৫ দফা দাবি না মানলে বিশাল এ জনসভা থেকে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

জামায়াতের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে আজ রাজধানীর পল্টনে গণসমাবেশ করছে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া আট দল। এ সমাবেশে হাজার হাজার নয়, বরং লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে বলে দলগুলো আশা করছে। সমাবেশ সামনে রেখে গতকাল সোমবার পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যালয়ে বৈঠক করেন আট দলের নেতারা। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশার কথা জানান জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল হাজার হাজার নয়, লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে। লোকে লোকারণ্য হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। রাজধানী এবং আশপাশের মানুষই এতে যুক্ত হবে। আমরা দেশব্যাপী সমাবেশের ডাক দিতে পারতাম। তবে আগামীকাল শুধু রাজধানী ও আশপাশের জনবল নিয়েই সমাবেশ হবে। এতে যদি সরকার বুঝতে পারে, তাহলে আশা করি এই সমাবেশেই একটা বড় ধরনের মতামত উঠে আসবে।’

পাঁচ দফা দাবি আদায়ে নিজেদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের চতুর্থ পর্ব শেষ হয়ে পঞ্চম পর্ব চলমান। গত ৬ তারিখ আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। একই সঙ্গে ১১ নভেম্বর আমরা গণসমাবেশ ঘোষণা করেছিলাম। আমরা জনগণের কিছু মৌলিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। এটা কোনো জোট নয়, এটা আন্দোলনের একটা প্ল্যাটফর্ম।’ তিনি জানান, তারা জনদুর্ভোগ সব সময় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। সমাবেশ ঘিরে দুর্ভোগের কথা তারা বিবেচনা করেছেন। তাদের কর্মসূচির সময় দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা নিয়ে এ নেতা বলেন, ‘তারা জামায়াতের ডাকে সাড়া দেবেন না, ওনারা এটা প্রকাশ্যে বলে দিয়েছেন। আমরাও প্রকাশ্যে বলে দিলাম, ওনারা আমাদের ডাকুক, আমরা অবশ্যই সাড়া দেব। আমরা আলোচনা এবং আন্দোলন উভয় চেষ্টা অব্যাহত রাখব।’ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা বিফলে গেছে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলোচনা ভেস্তে যায়নি। আলোচনার মাধ্যমে একটি সনদ তৈরি এবং স্বাক্ষরিত হয়েছে। মূলত সনদ নিয়ে নয়, সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘গণভোট সংবিধানে ছিল, ফ্যাসিস্টরা বাদ দিয়েছে। যারা সংবিধানে গণভোট নেই বলে বলছেন, তারা ফ্যাসিস্টের কাজকে সমর্থন করছেন। সংবিধানে পাঁচ বছর পর নির্বাচনের কথা আছে। তাহলে কি সংবিধান অনুযায়ী ২৬ সালে নির্বাচন হওয়ার কথা? বর্তমান সরকারও তো সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতা পায়নি।

এদিকে, গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। এরপর দেশের রাজনীতিতে বিএনপি, জামায়াত, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বড় শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জামায়াত ও বিএনপি মাঠের কর্মসূচি দিলেও এনসিপি এখনো তেমনটা ঘোষণা করতে দেখা যায়নি।