ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে শত শত টমেটো গাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০২:১৬ এএম

**** গোপালগঞ্জ সদর
*** ১২২ ঘেরপাড়ে প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের টমেটো চাষ
*** ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষক

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ও সিলনা গ্রামে অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে শত শত টমেটো গাছ। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ টমেটো গাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১২২টি ঘেরপাড়ে প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের টমেটো চাষ করেন কৃষকরা। প্রতি বছরই এখানকার টমেটো গোপালগঞ্জের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, খুলনা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এ বছর গাছে ফুল ও ফল ভালো আসায় কৃষকরা ভালো লাভের আশায় ছিলেন। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করেই টমেটো গাছগুলো শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।

রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘গাছে যখন ফুল আসছিল, তখন খুব খুশি ছিলাম। কিন্তু এখন দেখি একের পর এক গাছ মরে যাচ্ছে। ওষুধ দিচ্ছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। এই অবস্থায় ধার-দেনা শোধ করব কীভাবে, বুঝতে পারছি না।’

আরেক কৃষক সজিব বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা অনেক টাকা ধার করে চাষ করেছি। এখন গাছ মরে যাওয়ায় সব শেষ। সরকার যদি সাহায্য না করে, তাহলে বড় বিপদে পড়ব।’

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একই জমিতে বারবার একই ফসল চাষের ফলে মাটির জীবাণু পরিবর্তন হয়, যা এ ধরনের রোগের অন্যতম কারণ হতে পারে। রঘুনাথপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার বলেন, ‘আমরা নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। একই জমিতে বারবার টমেটো চাষ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রোগের প্রকৃতি নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, ‘রোগটির প্রকৃতি এখনো নিশ্চিত নয়। নমুনা পরীক্ষার কাজ চলছে। দ্রুত রোগ শনাক্ত করে কীটনাশক ও ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

জেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে গোপালগঞ্জে মোট ৯৯৬ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে হঠাৎ এই অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব চলতে থাকলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।