শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৫, ০১:৩৫ এএম

শেয়ারবাজারে কারসাজি

সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনকে দুদকে তলব

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৫, ০১:৩৫ এএম

সাকিব আল হাসানসহ  ১৫ জনকে দুদকে তলব

শেয়ারবাজারে কারসাজি, অবৈধ লেনদেন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও আওয়ামী লীগ মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ আসামিকে আগামী ২৫ ও ২৬ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে গত ১৭ জুন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ ধারা; দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা; এবং দ-বিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/১২০ বি/১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

গত ১৭ মে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে শেয়ারবাজারে অর্থ লোপাটের মামলাটি দায়ের করেন। ১৬ জুন আদালত তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেনÑ সাকিবের মা শিরিন আক্তার, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক আবুল খায়ের, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, জাভেদ এ মতিন, জাহেদ কামাল, হুমায়ূন কবির ও তানভীর নিজাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তারা নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মতো ধারাবাহিক লেনদেন, প্রতারণামূলক সক্রিয় লেনদেন, ফটকা ও অনুমাননির্ভর লেনদেনের মাধ্যমে বাজারে কারসাজি করত। তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করত। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন এবং চক্রটি ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করে, যা অস্বাভাবিক মূলধন লাভ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল অপরাধলব্ধ অর্থ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এ ধরনের বাজার কারসাজির ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা ক্ষতির শিকার হয়েছেন এবং ওই অর্থ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়া শেয়ারবাজার থেকে অর্জিত অস্বাভাবিক ক্যাপিটাল গেইন বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করে উৎস গোপন করার অভিযোগও রয়েছে। এতে আবুল খায়েরের স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানও সহযোগিতা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্যাপিটাল গেইনের নামে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা স্থানান্তরের তথ্যও মামলায় যুক্ত আছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরুর ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর গত ১৭ জুন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দ-বিধির বিভিন্ন ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

দুদক বলছে, মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) শেয়ারবাজার থেকে তোলা অর্থ থেকে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের সহায়তায় বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে ‘মানিলন্ডারিং’ করেন। হিরুর নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার ‘অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক ও সন্দেহজনক’ লেনদেন হওয়ার কথাও বলা হয়েছে মামলার এজাহারে।

সেখানে বলা হয়েছে, হিরুর কারসাজি করা প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেন। এতে তিনি মার্কেট ম্যানিপুলেশনে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণার মাধ্যমে প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ারবাজার থেকে উত্তোলন-পূর্বক আত্মসাৎ করেন। এই প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদরে কারসাজির অভিযোগেই গত সেপ্টেস্বরে সাকিবকে ৫০ লাখ টাকা জারিমানা করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সে সময় আবুল খায়ের ওরফে হিরুকে ২৫ লাখ টাকা, ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৭৫ লাখ টাকা, মোনার্ক মার্ট লিমিটেডকে ১ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ টাকা, লাভা ইলেক্ট্রোড ইন্ডাস্ট্রিজকে ১ লাখ টাকা এবং জাহেদ কামালকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। মামলা তদন্তের অংশ হিসেবে দুদক এজাহারভুক্ত ১৫ আসামিকে তলব করেছে। তাদের মধ্যে ২ নম্বর আসামি সাকিব আল হাসানকে ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে।

দুদক বলছে, সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগেও পৃথক অনুসন্ধান চলছে। একই দিন ও সময়ে ওই অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আগস্টে তিনি যখন কানাডায়, সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর তার আর দেশে ফেরা হয়নি। ক্রিকেট তারকা সাকিব একসময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসি এবং দুদকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। এখন পুঁজিবাজারের কেলেঙ্কারিতে সেই দুদকের মামলাতেই তাকে আসামি হতে হয়েছে। শেয়ার ‘কারসাজির’ অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সাকিবকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। তারপর ৮ নভেম্বর সাকিবের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কথা জানায় আর্থিক খাতের গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিদেশে থাকা সাবেক এই এমপির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আসে গেল ১৬ জুন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!