বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শহিদুল ইসলাম রাজী

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ আগুন

সম্বল এখন বিশাল আকাশ আর পোড়া ধ্বংসস্তূপ

শহিদুল ইসলাম রাজী

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

সম্বল এখন বিশাল আকাশ  আর পোড়া ধ্বংসস্তূপ

কড়াইল বস্তির ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বিলাপ করছেন সর্বস্ব হারানো, নিঃস্ব হয়ে যাওয়া পঞ্চাশোর্ধ্ব মানিক। অনেক না থাকার মাঝেও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত মানিকদের সবই ছিল। এখন সম্বল বিশাল আকাশ, আর সামনে থাকা পোড়া ধ্বংসস্তূপ। মানিকের ঘরের মাঝখানে প্লাস্টিকের ছোট্ট একটি ওয়ারড্রব ছিল। এর ভেতরে ছিল শিশুকন্যার একটি মাত্র স্বর্ণের চেইন। আগুনে ওয়ারড্রব পুড়ে গলে গেছে। সঙ্গে সোনার চেইনটিও উধাও। তাই তিন ওয়ারড্রব রাখার জায়গায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হারটি খুঁজছিলেন। লোকজন তাকে বারবার বলছেন, চেইনটি পাওয়া যাবে না। কিন্তু তা মানতে নারাজ মানিক। ছাইয়ের মধ্যে হাতড়ে বেড়াচ্ছেন শেষ সম্বলটুক। ভয়াবহ আগুনে স্বর্বস্ব হারিয়ে এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে মানিকরা। দিন কাটছে তাদের খোলা আকাশের নিচে। পুড়ে যাওয়া মালামাল থেকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন অবশিষ্ট কিছু।

মানিক জানান, দুই সন্তান ও স্বামী-স্ত্রী মিলে ৩ হাজার ৬০০ টাকায় ভাড়া থাকতেন কড়াইল বস্তির মিন্টু মিয়ার একটি ছোট্ট ঘরে। স্বামী-স্ত্রী শাক তুলে বিক্রি করতেন, কখনো কখনো মাটি কাটেন। কিশোর ছেলে একটি ব্যাংকের ঝাড়ুদার হিসেবে চাকরি করে। অগ্নিকা-ের সময় ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে ঘরেই ছিলেন। কিন্তু কিছুই বের করতে পারেননি। পরনের কাপন ছাড়া সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সবকিছু হারিয়ে তার চোখে-মুখে এখন কেবলই একরাশ বেদনা।

শুধু মানিক জান-ই নন, তার মতো আগুনে সবহারা পরিবারগুলো ছাইয়ের মধ্যে অবশিষ্টাংশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। জীবন ছাড়া আর কিছুই রইল না তাদের। বস্তির এক অংশ পুড়ে অচেনা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে যে ঘর ছিল, তার অস্তিত্বই নেই। এক কাপড়ে খোলা আকাশের নিচে সন্তানদের নিয়ে এখন ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থান। খাবার সংকটে ভুগছেন তারা। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দল থেকে রুটি-কলা আর খিচুড়ি দিয়ে সাময়িক সহায়তা করা হচ্ছে। আগুনে পুড়েছে বস্তিতে থাকা বিদ্যালয়ও। এতে শিশুদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সর্বনাশা আগুনের লেলিহান শিখায় বস্তির ১৫০০ ঘর পুড়ে যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। তবে বস্তিবাসীর দাবি, এই সংখ্যা আরও বেশি। ২ হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে। আগুন লাগার সূত্রপাত সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে বস্তির একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, খেলনা দোকানের মালিক মিন্টু মিয়ার রান্নাঘরের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো বস্তিতে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো জ্বলতে থাকা সেই আগুন পুরোপুরি নির্বাপণে আসে ১৬ ঘণ্টা পর। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  

বস্তির বউবাজারের কুমিল্লা পট্টি, বরিশাল পট্টি ও ‘ক’ ব্লক এলাকায় আগুন লাগে। ওই অংশে একতলা ও দোতলা সিস্টেমের সেমিপাকা প্রায় দুই হাজারের মতো ঘর ছিল। আগুনে সব ঘর পুড়ে গেছে। শুধু খোপ খোপ দেয়াল পড়ে আছে। বস্তির মূল সড়কসহ অলিগলিতে ছিল মুদি দোকান, টেইলার্সের দোকান, খাবার দোকান, ভাঙারিসহ হরেক রকমের দোকান। এসব পুড়ে একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা বলেন, আগুন লাগলে প্রয়োজনীয় জিনিস কেউ ট্রাঙ্কে, কেউ বালতি বা পাতিলে, আবার কেউ পলিথিনে বেঁধে পানির হাউসে ফেলে দেন বা পাশের নিরাপদ স্থানে রাখেন। আগুন নিভে গেলে তা তুলে নেন। এতে অন্তত জরুরি কিছু জিনিস আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।

বউবাজারের কুমিল্লা পট্টিতে স্বামী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে থাকতেন শান্তি বেগম। টিভি গেট এলাকায় বাসাবাড়িতে ছুটা বুয়ার কাজ করেন। তার স্বামী একটি চিপস কোম্পানির অফিসের পিয়ন। শান্তি বলেন, পরনের কাপড় ছাড়া কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। সোমবার থেকে এক কাপড়ে আছি। যে যা দেয় তাই খেয়ে আছি। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অনুদান দেওয়া হয়নি। ঢাকায় কোনো আত্মীয় নেই যে তাদের কাছে আশ্রয় নিব। রাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে পুড়ে যাওয়া ভিটায় থাকতে হবে।

১৩টি সেমিপাকা ঘর পুড়ে গেছে নুর মোহাম্মদের। ভাড়াটিয়াদের নিয়ে পোড়া টিন, হাঁড়ি-পাতিল আর অবশিষ্ট আসবাবপত্র গুছিয়ে রাখছেন। নুর মোহাম্মদ জানান, মাসে ঘরপ্রতি ৬০ টাকা করে ময়লার বিল, লাইনের গ্যাস না থাকলেও ৭০০ টাকা করে গ্যাস বিল, ৩০ টাকা নাইটগার্ড বিল দিতে হয়। এ ছাড়া পানি ও কারেন্ট বিলও দিতে হয়। ১৯নং ওয়ার্ডের ২নং ইউনিটের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন গ্যাস ও নাইটগার্ড বিল তুলে নেন। 

খোলা আকাশের নিচে বাসিন্দারা :

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসিন্দারা কেউ কাছের খামারবাড়ি (ঈদগাহ) মাঠে, অনেকে এরশাদ স্কুলমাঠ কিংবা মহাখালী টিঅ্যান্ডটি মাঠে আশ্রয় নিয়েছেন। খামারবাড়ি মাঠে গিয়ে শতাধিক পরিবারের সদস্যদের মালপত্র নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে। পরে টিঅ্যান্ডটি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, শত শত মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। তাদের সঙ্গে ছিল ঘর থেকে আনা কিছু মালপত্র ও আসবাব। মশার কামড়ের পাশাপাশি হালকা শীত থেকে বাঁচতে কাঠ, প্লাস্টিক পুড়িয়ে তারা মাঠে বসে আছেন।

নুরেনা বেগম বলেন, আগুন লাগে বরিশাল পট্টি থেকে। আগুন দ্রুত চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই ঘর থেকে দুটি র‌্যাক ছাড়া কিছুই আনতে পারেননি। 

নিঃস্ব বাসিন্দাদের অনেকে পোড়া ঘরে বিছানা পেতে তাতে রাত্রীযাপন করেন। যেখানে ওপরে নেই কোনো ছাদ, নেই বেড়া। সেখানেই ছোট্ট শিশুসন্তানকে মুড়ি দিয়ে কোনোরকম জীবন পার করছেন। আগুনে সব কেড়ে নিলেও নিজ ভিটা ছেড়ে অন্যত্র যেতে নারাজ তারা।

সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সূত্রপাত :

বউবাজারের কুমিল্লা পট্টিতে ২০টি ঘর রয়েছে মিন্টু মিয়ার। সম্প্রতি এক অংশ ভেঙে দোতলা করছিলেন। মাত্র দেয়াল দাঁড় করিয়েছেন। অন্য অংশে একতলা বিশিষ্ট ঘর। ঘরের সামনের অংশে বাচ্চাদের খেলনার দোকান রয়েছে মিন্টু মিয়ার। সেখানে তিনি নিজেই এসবের ব্যবসা করেন। পেছনে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দোকানের পেছনের ঘরটিতে থাকেন। ঘরটির আশপাশের বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে মিন্টু মিয়ার রান্নাঘরের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। তখন উপস্থিত লোকজন পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সিলিন্ডারের আগুনে পানি ছিটানোর ফলে আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

অন্যদিকে মিন্টু মিয়ার মেয়ে আছমা বলেন, তাদের ঘরের পাশে তিন তলাবিশিষ্ট ঘরে প্রথমে আগুন লাগে। সেই আগুন থেকে তাদের ঘরে আগুন লাগে। এরপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর থেকে তার হোসনে আরা নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। আর তার বাবা পায়ে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে আশপাশের বাসিন্দারা তৎক্ষণাৎ আছমার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং জানান, আছমাদের ঘর থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এখন তারা স্বীকার করছে না। ঘটনার পর থেকে তার মা ইচ্ছা করে আত্মগোপনে রয়েছেন।

মিন্টু মিয়ার ঘরের আশপাশে থাকা দোকানিরাও জানিয়েছেন, মিন্টু মিয়ার ঘর থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসও জানিয়েছে, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত।

ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় :

বস্তির তালতলায় ওয়াসা পাম্পসংলগ্ন স্থানে ‘মায়ের দোয়া বিদ্যানিকেতন ও হাই স্কুল নামে’ বিদ্যালয়টিও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারপাশের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। এ জন্য ওই অংশটুকু ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এখানে প্লে গ্রুপ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত চলে পাঠদান। তবে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে বস্তির বাসিন্দাদের সন্তানদের পাঠদান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, বিদ্যালয়টি তাদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোর একমাত্র সম্বল। তবে আগুনে স্কুলটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিশুদের ভবিষ্যৎ পড়েছে হুমকির মুখে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. মনির হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকবে সব কার্যক্রম। পরীক্ষাও পেছানো হবে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, আগুনে স্কুলের শিক্ষার্থীদের বইখাতাও পুড়ে গেছে বা নষ্ট হয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বুধবার বস্তিতে ঘুরে দেখা যায়, বস্তির প্রবেশমুখগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বেলা ১১টার দিকে অগ্নিকা-স্থল পরিদর্শন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস এন নজরুল ইসলাম। চারদিকের বাতাস এখনো ভারি। পোড়া গন্ধটা যেন কড়াইল বস্তির প্রতিটি ধূলিকণায়, প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসে মিশে আছে। সকালে সূর্যের আলো ফুটতেই স্পষ্ট হয়েছে ধ্বংসের এক বীভৎস ক্যানভাস। সেখানে জীবনের কোনো রং নেই, আছে শুধু ছাই আর হাজারো মানুষের বুকফাটা হাহাকার। মঙ্গলবারও যেখানে ছিল সারি সারি টিনের ঘর, সেখানে কেবলই পোড়া স্তূপ। বাঁশ, কাঠ আর টিনের ভাঙা টুকরোগুলো একাকার হয়ে আছে মাটির সঙ্গে। এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই মানুষের বেঁচে থাকার স্বপ্নগুলো বাসা বাঁধা ছিল।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো এই ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন কেউ নীরবে, কেউবা বিলাপ করতে করতে। তারা ছাইয়ের মধ্যে খুঁজে দেখছেন, তাদের সামান্য সম্বল, অতি সাধারণ জিনিসপত্র। আশা করছেন হয়তোবা কিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়নি, যা এখনো অক্ষত আছে। পোড়া টিনসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বেঁধে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে।

১৫০০ ঘর পোড়ার তথ্য ফায়ার সার্ভিসের :

ভয়াবহ এই আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ করতে ১৬ ঘণ্টা সময় লাগে। বুধবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নেভানোর কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। তবে এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

আগুনে বস্তির প্রায় ১৫০০ ঘর-বাড়ি পুড়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেন্টেনেন্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। যত্রতত্র বিদ্যুতের তার, প্রত্যেক বাসায় গ্যাস সিলিন্ডারের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান তিনি।

তবে বস্তির বাসিন্দাদের দাবি, দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়েছে। বস্তির অধিকাংশ ঘরই দোতলা বিশিষ্ট। তাই পুড়ে যাওয়া ঘরের সংখ্যাও বেশি। 

বুধবার ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, অগ্নিকা-ের ঘটনায় উপ-পরিচালক (অপারেসন্স অ্যান্ড মেইন্টেনেন্স) মো. মামুনুর রশিদকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা :

বস্তির সবাই নি¤œ আয়ের মানুষ। কেউ রিকশা চালিয়ে সংসার চালান, কেউ বাসাবাড়িতে কাজ করেন, কেউবা দিনমজুরের কাজ করেন। এ ছাড়া আগুনে বাসায় থাকা চাল-ডাল থেকে শুরু করে সবই পুড়ে গেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খাদ্যাভাবে ভুগছেন। এ অবস্থায় কিছুটা হলেও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিরা। 

বুধবার বস্তিতে ঘুরে দেখা যায়, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থের পক্ষ থেকে খিচুড়ির প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। পারটেক্স গ্রুপের পক্ষ থেকে খাবার পানি ও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরাও খাবার বিতরণ করেন। সহকর্মীদের নিয়ে খিচুড়ি বিতরণ করেন ল্যান্ড মার্ক গ্রুপের সিইও বিএম সাইফুদ্দিন। এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে আরও অনেককে খাবার বিতরণ করতে দেখা গেছে। অসহায় বস্তিবাসীর এই খাবারই একমাত্র বেঁচে থাকার সম্বল। দেখা যায়, ঢাকা-১৭ আসনের জামায়াত প্রার্থী ডা. এসএম খালিদুজ্জামানের ব্যানারে পোড়া বস্তির দুই স্থানে মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়েছে। সেখানে বস্তির আহত বাসিন্দাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন কয়েকজন চিকিৎসক। এ ছাড়া জরুরি ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তর, ব্র্যাক ও বেশ কয়েকটি এনজিও কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের তালিকা সংগ্রহ করেন।

জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের ফিল্ড কর্মী মোসাম্মদ রাবেয়া খাতুন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত যেসব পরিবারে শিশু রয়েছে, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। অধিদপ্তরে চলমান প্রকল্প থেকে শিশুদের কিটবক্স, বয়স অনুযায়ী পোশাক, জুতা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!