চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায় উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর বাজারে এ সংঘর্ষ হয়। একই সংঘর্ষের ঘটনায় আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
ছাত্রদলের নিহত কর্মীর নাম গাজী তাহমিদ খান (২০)। তিনি উপজেলার উত্তর হিঙ্গুলী এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, নিহত তাহমিদ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের জোরারগঞ্জ থানার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। পরে তিনি নিরাপদ সড়ক আন্দোলন মিরসরাই উপজেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিবের দায়িত্ব নেন। সম্প্রতি তিনি বারইয়ারহাট পৌরসভা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। বিএনপির বিভিন্ন সভা ও অনুষ্ঠানে তিনি যেতেন।
বুধবার সন্ধ্যায় বারইয়ারহাট দক্ষিণ পৌর বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ছাত্রদলের উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে তাহমিদ অংশ নেন। মাহফিল শেষে কথাকাটাকাটি থেকে পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি দিদারুল আলম মিয়াজির অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় এক পক্ষের ছুরিকাঘাতে তাহমিদ খান গুরুতর আহত হন। পরে তাহমিদকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে চমেক হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। একই সংঘর্ষের ঘটনায় আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
জানতে চাইলে বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি দিদারুল আলম নিয়াজী বলেন, তাহমিদ আমাদের সব মিটিং-মিছিলে থাকতেন। তবে এটি দলীয় কোনো ব্যাপার নয়, ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে তিনি খুন হয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
দিদারুল আলম নিয়াজী এলাকায় মিরসরাই সংসদীয় আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিনের (চেয়ারম্যান) অনুসারী হিসেবে পরিচিত। জানতে চাইলে নুরুল আমিন বলেন, ‘তাহমিদ হত্যাকা- বিএনপির অন্তর্কোন্দল বা দলীয় কোনো বিষয় নয়। আমাদের এক কর্মীর পা তুলে বসা নিয়ে বারইয়ারহাট পৌর বাজারের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ও বিএনপির নেতা নজরুল ইসলামের সঙ্গে বাগবিত-া হয়। এ বাগবিত-া থেকেই দুটি গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ গড়ায়। সেই সংঘর্ষে তাহমিদ নিহত হয়। কিছুদিন আগে ছেলেটি ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হতে আমার কাছে এসেছিল। আমি তাকে দিদারুল আলম মিয়াজির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছিলাম।’
জোরারগঞ্জ থানার ওসি কাজী নাজমুল হক বলেন, ‘বুধবার বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর মধ্যে কথাকাটাকাটি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে দু-একজন আহত হয়েছে বলে শুনেছিলাম। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তাহমিদ নামের একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে আমরা পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছি।’

