মুন্সীগঞ্জ শহরের মানিকপুর থেকে কাটাখালি সড়কে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে আবারো অস্থায়ী সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছে পৌরসভা। প্রথমবার ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা সড়কটি অল্প সময়ের মধ্যেই পুনরায় বেহাল দশায় পরিণত হওয়ায় এবার একই সড়কে ২০ লাখ টাকার নতুন টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহারের কারণে দুই মাসের মধ্যেই সংস্কারের কাজ অকেজো হয়ে গেছে। এ কারণে জনজীবনে অসুবিধা বাড়ছে এবং সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে ‘মেসার্স মাজেদ ট্রেডার্স’ নামক প্রতিষ্ঠান তিন মাস মেয়াদে সড়ক সংস্কারের কাজ নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মানিকপুর ১০ তলা ভবন থেকে শুরু করে সুপারমার্কেট, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, জেলা পরিষদ, থানা সড়ক হয়ে পতাকা একাত্তর ভাস্কর্য পর্যন্ত গর্ত ভরাট ও পিচঢালাই করা হয়। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনেক জায়গায় কাজ হয়নি বা নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে, যা পায়ে আঘাত দিয়ে দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে।
সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু দুই মাস না যেতেই সড়কটি বিভিন্ন গর্তে ভরে পড়ে এবং চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়।
‘মেসার্স মাজেদ ট্রেডার্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা মাজেদুল ইসলাম দাবি করেন, টেন্ডারের আওতায় সব কাজ করেছেন এবং বিলও পৌরসভা থেকে পেয়েছেন।
তবে স্থানীয়রা পৌরসভার তদারকি ও জবাবদিহির অভাবকে দায়ী করছেন ঠিকাদারদের কাজের গুণগত মান খারাপ হওয়ার জন্য। তারা জানাচ্ছেন, বারবার অস্থায়ী সংস্কার করলে যেমন ভোগান্তি বাড়ে, তেমনি সরকারি অর্থ অপচয় হয়।
পৌর প্রশাসক মৌসুমী মাহবুব জানান, নতুন ২০ লাখ টাকার টেন্ডারে কাজ চলছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য লঞ্চঘাট থেকে সুপারমার্কেট ও মানিকপুর থেকে সুপারমার্কেট পর্যন্ত বড় প্রকল্প অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালে পুরোনো তিতাস গ্যাস লাইনের লিকেজ থাকায় স্থায়ী সংস্কার সম্ভব হয়নি। তিতাস গ্যাস টেন্ডার শেষ করেছে এবং গ্যাস লাইন অপসারণ শুরু করবে। এরপরই টেকসই সংস্কার করা যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বারবার অস্থায়ী সংস্কারে বিপুল অর্থ ব্যয় করেও স্থায়ী সমাধান না করায় পৌরসভার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন দক্ষতার ওপর প্রশ্ন উঠেছে। টেন্ডার ও কাজের স্বচ্ছতাকেও তারা সন্দেহ করছেন।