সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ১২:০৩ এএম

পাঠদান শুরু বুধবার

শোকের আবহ নিয়ে খুলল মাইলস্টোন কলেজ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ১২:০৩ এএম

শোকের আবহ নিয়ে খুলল  মাইলস্টোন কলেজ

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ১২ দিন পর গতকাল রোববার শোকের আবহ নিয়ে খুলেছে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এদিন সকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কলেজ শাখার (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসে। তবে গতকাল কোনো পাঠদান কার্যক্রম হয়নি। আগামী বুধবার থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।


শিক্ষার্থীরা যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত, আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় আয়োজিত দোয়া এবং শোক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। পরে নিজেদের মধ্যে কুশলাদি বিনিময় করে বাসায় ফিরে যায়। সকাল সোয়া ১০টার দিকে দিয়াবাড়ি গোলচত্বর সংলগ্ন মাইলস্টোন কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিফর্ম পরা শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে। কিছু কিছু শিক্ষার্থীর কাঁধে ব্যাগ রয়েছে।


কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত বলে, ‘সকাল সাড়ে ৮টায় এসেছি। কোনো ক্লাস হয়নি। টিচাররা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ভালোমন্দ খোঁজখবর নিয়েছেন। পরে দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়েছি। এখন বাসায় চলে যাচ্ছি।’


মাইলস্টোনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, আজ (গতকাল) কলেজ শাখা খুলেছে, তবে পাঠদান কার্যক্রম হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় কলেজ শাখার শিক্ষার্থীরা তিন ধাপে (সকাল ৯টা, সাড়ে ১০টা ও দুপুর ১২টা) শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে।


সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাইলস্টোনের লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামালউদ্দীন মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় ধাপের শোক ও দোয়া অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। পুরো মিলনায়তনে শিক্ষার্থীতে পরিপূর্ণ। তাদের মধ্যে শোকের আবহ বিরাজ করছে।


অনুষ্ঠানে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল (অব.) নুরন নবী বলেন, ‘যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল, যে ২৭টি ছোট শিশু নিঃশেষ হয়ে গেল, কীভাবে এটা আমরা মেনে নিতে পারি? আমাদের দুজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। পাঁচজন শিক্ষক এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। আছে আরও ৩৩ জন শিক্ষার্থী। কী সান্ত¡না দেব আমি এদের বাবা-মায়েদের? মাইলস্টোনের এক শিক্ষক দম্পতি দুর্ঘটনায় তাঁদের সন্তান হারিয়েছেন। এই শোক কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’


শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নুরন নবী আরও বলেন, ‘আমি অনেকের বাসায় গিয়েছি, যারা তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন। কী সান্ত¡না দেব? মা নির্বাক হয়ে আছেন, কথা বলতে পারছেন না। বাবাও শোকে পাথর হয়ে আছেন। এই শোক কাটিয়ে ওঠার নয়। এই শোক মা-বাবাদের তাদের মৃত্যুর সময়ও যন্ত্রণা দেবে।’
মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা গত ২১ জুলাই ফেস করেছি। আমি আমার কক্ষ ভবন-১-এ কাজ করছিলাম। হঠাৎ একটা শব্দ। জানালা দিয়ে দেখি আগুন। দৌড়ে যাই। তখনো বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়নি কেউ এটাতে চলে যেতে পারে। হঠাৎ যখন দেখি এক শিক্ষার্থী ও এক ম্যাডাম পড়ে আছে, আমি শকড হই। মুহূর্তের জন্য নিজেকে হারিয়ে ফেলি।’


কলেজ শাখার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জিয়াউল আলম বলেন, ‘তোমাদের ছোট ক্লাস টু, থ্রি ও ফোরের শিক্ষার্থীরা, তারা এখনো ট্রমাটাইজড। তোমরা অনেককেই হয়তো চেনো। তাদের বাসা তোমরা ভিজিট করতে যাও। ওদের সময় দাও।’


সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে অধ্যক্ষ বলেন, ‘নিজেদের এই ট্রমা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যারা চলে গেছে, তাদের অনেকের বড় ভাইবোন তোমাদের সহপাঠী। ওদেরও সময় দাও, ট্রমা থেকে বের করে আনো। নিহত ব্যক্তিদের অভিভাবকদেরও সময় দাও। কলেজের এই গুমোট পরিবেশ, অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। যদি আমরা এগিয়ে আসি, একে অন্যের পাশে দাঁড়াই, আশা করি, দ্রুত এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।’


অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে অধ্যক্ষ জিয়াউল আলম বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী ট্রমার মধ্যে আছে, আতঙ্কিত, তাদের কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে। অভিভাবকদেরও কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে। আগামী তিন মাস কাউন্সেলিং চালানো হবে।’


বেশির ভাগ অভিভাবক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি খুলে দেওয়ার পক্ষে বলে জানান অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, অভিভাবকেরা চাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসুক। একজন আরেকজনের সঙ্গে দেখা হলে, শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে, তাদের ভেতরে যে আতঙ্ক, গুমোট অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। তাই আগামী থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!