সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে চলছে ত্রিরতেœর দুর্নীতির মহোৎসব

জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০১:৩৩ এএম

মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে চলছে ত্রিরতেœর দুর্নীতির মহোৎসব

  • মানহীন উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ
  • বালির বদলে দেওয়া হচ্ছে পলিথিনযুক্ত কাদামাটি
  • পানি নিষ্কাশনে কালভার্টের পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে পাইপ

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নে ‘কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প’কে কেন্দ্র করে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের পুরো কাজটাই করা হচ্ছে মানহীন উপকরণ দিয়ে। শুধু তাই নয়, যেখানে ইট-বালি দেওয়ার কথা সেখানে দেওয়া হচ্ছে পরিত্যক্ত পলিথিনযুক্ত কাদামাটি। অভিযোগের তীর প্রকল্পের মান নিশ্চিত করার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিডিএ’র প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ ও সরঞ্জাম তদারক কর্মকর্তা জসিম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ অসীম কুমার বাবুর বিরুদ্ধেও।


সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে ব্যবহৃত লোহার পাইপগুলো মরিচা ধরে ভাঙতে শুরু করেছে। বালুর সাথে মেশানো হচ্ছে পুরোনো পলিথিন ও কাদামাটি। মূল প্ল্যানে থাকা বেশ কয়েকটি ‘কালভার্ট’ বাদ দিয়ে সেখানে পাইপ লাগিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে কারণে অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে আশপাশের এলাকা। বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে স্বীকার করেছেন প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকরা। জিজ্ঞেস করলে একাধিক শ্রমিক জানান, প্রকল্প পরিচালকের নির্দেশেই বালুর স্থলে পলিথিন দিচ্ছেন তারা।


জানা গেছে, ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ২ বছর আগে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো চলছে নির্মাণকাজ। এরই মধ্যে প্রকল্পব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।


ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ইনচার্জ অসীম কুমার বাবুর বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ। স্থানীয় শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রাজীব দাশ ও জসিমের সাথে ছত্রছায়ায় মানহীন উপকরণ ব্যবহারের নির্দেশ দেন অসীম কুমার। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পে ব্যবহৃত উপকরণের মান যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা জসিম স্পেক্ট্র ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের অনিয়ম ধামাচাপা দিতে সিডিএ’র কাছে মনগড়া রিপোর্ট জমা দেন।


মানহীন কাজের প্রতিবাদ করতে গেলে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন ত্রিরতœ চক্র। মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে বন্ধ করা হয় স্থানীয়দের মুখ। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, মানহীন কাজের প্রতিবাদ করলেও পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয় জসিম।


উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেও এই চক্র যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঠিকাদার স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ইনচার্জ অসীম কুমার বাবুর বিরুদ্ধে ওঠা নি¤œমানের কাজ, বিল কেলেঙ্কারি এবং রড-বালু সরবরাহে ঘাপলা থাকলেও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন তিনি।  
প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। শুধু রাজীবই নয়, সিডিএ’র একাধিক কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। গণঅভ্যুত্থানের পর সিডিএতে বেশ কয়েকবার অভিযানও চালিয়েছেন তারা।


প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীর শাহ আমানত সেতু থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর শহরাংশে চার লেনের সড়কসহ বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। চাক্তাই, রাজাখালী, বলিরহাট, সাব খাল-২ ও ইস্পাহানি খাল, কল্পলোক এলাকা হয়ে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত চার লেনের সড়ক নির্মাণের কাজ অনেকটা শেষের দিকে।


বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশকে কল করা হলে রিসিভ করে মুঠোফোন বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি। মুঠোফোন রিসিভ করেননি অসীম কুমার। মুঠোফোনে বার্তা পাঠানো হলে তারও কোনো জবাব দেননি তারা। তবে সরঞ্জাম তদারক কর্মকর্তা জসিম মুঠোফোনে বলেন, আমরা ছোটখাটো চাকরি করি। কাজের মান যারা তদারকি করার কথা তারাই ভালো বলতে পারবেন। বক্তব্য জানতে কল করা হলে মুঠোফোন রিসিভ করেননি সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস।


চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নেওয়া ‘কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প’ ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল অনুমোদন করে একনেক।  ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করে সিডিএ। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে বাস্তবায়নাধীন ‘কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের’ একপাশে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলছে সিডিএ।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!