ঢাকা সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চলন্ত গাড়ির সঙ্গে নারীকে টেনে নেওয়া তিন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫, ১২:০৫ এএম

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় এক নারীর হাতব্যাগ ছিনতাই এবং তাকে গাড়ির সঙ্গে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে আহত করার ঘটনায় তিন ছিনতাইকালীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা হলো- ইউসুব মিয়া ওরফে ইউসুফ ওরফে সোহরাব, রাজীব মাতুব্বর ও রবিউল। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত সাদা রঙের প্রাইভেট কার এবং ওই ভুক্তভোগী নারীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গতকাল এসব তথ্য জানান পিবিআই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ও অর্গানাইজড ক্রাইম দক্ষিণের (এসআইঅ্যান্ড ও দক্ষিণ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তার।

তিনি বলেন, ভিডিওফুটেজ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং আগের ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে তারা ইউসুব, রাজীব ও রবিউলকে শনাক্ত করেন। গত ২ আগস্ট উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৮ আগস্ট গাজীপুরের চন্দ্রা মোড় এলাকা থেকে ইউসুবকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর মিরপুর এলাকা থেকে রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে রবিউল ও ইউসুব আদালতে ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আশা করছি, দ্রুততম সময়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব।

স্বীকারোক্তিতে আসামিরা আদালতকে জানিয়েছেন, তারা পরস্পর বন্ধু। আসামি রবিউলের গাড়ি নিয়ে ঘটনার দিন রাত ১২টার পর বের হয়। তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ভোরের দিকে সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় আসে। ওই সময় আসামি রাজীব প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিল। রাজীবই ওই নারীকে টার্গেট করে কাছাকাছি গাড়ি নিয়ে গিয়ে গতি কমিয়ে ফেলে এবং আসামি ইউসুব ব্যাগ ধরে টান দেয়। তখন ওই নারী ব্যাগসহ গাড়ির সঙ্গে ছেচড়ে যেতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই নারী ছিটকে পড়ে যান। আর আসামিরা ব্যাগটি নিয়ে গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেলের দিকে চলে যায়। ঘটনার দিনও তারা এ ধরনের আরও চারটি ছিনতাই করে। তারা তিনজন মিলে ২৫-৩০টির বেশি ছিনতাই করেছে। প্রতিবার ছিনতাই শেষে মোবাইল ফোন ও অর্থ ভাগ করে নিত এবং ব্যাগে থাকা বাকি জিনিসপত্র ফেলে দিত।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিলে ভোরে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর গ্রিনল্যান্ড টাওয়ারের সামনে গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারহানা আক্তার জাহান ছিনতাইয়ের শিকার হন। তিনি বাসের জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কার এসে তার সামনে দাঁড়ায়। গাড়ির সামনের দিকে বাঁ পাশের জানালা দিয়ে একজন ছিনতাইকারী ঝুঁকে তার ভ্যানিটি ব্যাগটি ছোঁ মেরে টান দেয়। ব্যাগটির বেল্ট হাতে ধরে থাকায় ওই নারী ছিটকে পড়ে যান এবং গাড়ির সঙ্গে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে ব্যাগ থেকে তার হাত ছুটে গেলে ছিনতাইকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই নারী প্রাণে বাঁচলেও তিনি আহত হন। পরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে পুলিশকে রমনা থানায় মামলা নিতে বলেন। মামলার পর তদন্ত শুরু করে পিবিআই।