স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও তামাকমুক্ত গণপরিবহন নিশ্চিতে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, ডাস্ এবং ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে একটি লিফলেট ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিরোধে আইন শক্তিশালী করা জরুরি শীর্ষক এ লিফলেট ক্যাম্পেইনটি রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মসূচিতে বলা হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০৫ (সংশোধিত-২০১৩) অনুযায়ী গণপরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও তা কার্যকরভাবে মানা হচ্ছে না। তামাক কোম্পানির বেপরোয়া আইন লঙ্ঘন ও প্রশাসনের উদাসীনতায় গণপরিবহনের যাত্রীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। কাজেই গণপরিবহনে যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ধূমপান করলে চালক ও যাত্রী উভয়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক জরিমানার পাশাপাশি টার্মিনাল ও চেকপোস্টে নিয়মিত নজরদারি, প্রতিটি যানবাহনে তামাকমুক্ত সাইনবোর্ড লাগানো এবং লাইসেন্সে তামাকমুক্ত নীতি বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেই সঙ্গে পরিবহন লাইসেন্স নবায়নের শর্তে তামাকমুক্ত নীতি অনুসরণ করা জরুরি।
কর্মসূচিতে আরও বলা হয়, ঢাকার বিভিন্ন বাস টার্মিনাল, নদী বন্দরের আশপাশে এবং রেলস্টেশনসহ জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলোকে লক্ষ্য করে সিগারেট কোম্পানিগুলো নানা ধরনের প্রচারণা ও বিক্রয় কৌশল চালাচ্ছে। দোকানের সাইনবোর্ড, শেলফ বা গ্লাস কেবিনেটের মাধ্যমে ব্র্যান্ড প্রচারণা চালানো হয়। সিগারেট কোম্পানির সরবরাহ করা ঘড়ি, ক্যালেন্ডার, লাইটার, ছাতা ইত্যাদি দোকানে ব্যবহার করা হয় যা পরোক্ষ বিজ্ঞাপন হিসেবে যাত্রীদের প্রলুব্ধ করছে। আরও বলা হয়, লঞ্চ টার্মিনালে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় যাত্রীরা অপেক্ষমাণ স্থানে ধূমপান করছেন। নৌপরিবহন আইনে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার স্পষ্ট ধারা প্রয়োজন। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে নৌযানে আলাদা তামাকমুক্ত জোন না বরং সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত পরিবেশ জরুরি। সড়ক পরিবহন ক্ষেত্রেও চালক ধূমপান করলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।
সর্বোপরি লিফলেট ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও তামাকমুক্ত গণপরিবহন নিশ্চিতে আহ্বান জানানো হয়। জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটিয়ে তামাকমুক্ত পরিবহন নিশ্চিত করা সম্ভব বলে উপস্থিত সবাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এই লক্ষ্যে সরকার, পরিবহন মালিক, চালক, যাত্রী এবং সমাজের সব স্তরের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে সহমত প্রকাশ করেন।
লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, ডাস্রে টিমলিড আমিনুল ইসলাম বকুল, কর্মসূচি সমন্বয়কারী মোয়াজ্জেম হোসেন টিপু, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, বিএনটিটিপির প্রকল্প পরিচালক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নাটাবের প্রকল্প কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা রুশিসহ তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সবাইকে গণপরিবহনে তামাক কোম্পানির অবৈধ হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে আহ্বান জানানো হয়।