ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কমছেই না। গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৩০৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এ সময় নতুন করে কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ২২৪ জনই রয়েছে।
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩০৮ জন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৪৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৪০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২১ জন ভর্তি হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫৩ হাজার ১৯৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ৩১০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছে ৫০ হাজার ৫১৯ জন।
ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তি সচেতনতার বিকল্প নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘এবার গতবারের চেয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুহার কম হচ্ছে। একটি মৃত্যুও আমাদের কাম্য নয়। তাই আমরা আমাদের চিকিৎসার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। পরিসংখ্যান এবং হাসপাতাল থেকে যে মৃত্যুর তথ্য পাচ্ছি, তাতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রথম দিনেই বেশির ভাগ রোগী ৫০ শতাংশের বেশি মারা যাচ্ছে। তার মানে, রোগের যে আক্রমণ হয়েছে, এটা অনেক আগে। রোগীরা হাসপাতালে পরে এসেছে। আমরা হাসপাতালে যথেষ্ট পরিমাণ ব্যবস্থাপনার চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেটা সবচেয়ে বড় বিষয়, সেটা হলো জনগণের সচেতনতা। যেহেতু মশা উৎপন্ন হওয়ার বিষয় আছে, সে জন্য মশা ধ্বংসেরও বিষয় আছে। তাদের লার্ভা ধ্বংস করার বিষয় আছে। লোকজন যেন প্রোটেকটেড থাকে, সে জন্য মশারি টাঙানো। এগুলো খুবই জরুরি।
এগুলো হচ্ছে মূলত ব্যক্তিগত পর্যায়ের বিষয়। এগুলো যদি আমরা অবজ্ঞা করি, তাহলে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া মুশকিল। আবু জাফর বলেন, ‘ডেঙ্গু হলেও আমরা প্রথম পর্যায়ে যদি শনাক্ত করতে পারি, ডেঙ্গুর চিকিৎসা বাসায় বসেই হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। সিভিআর পর্যায়ে না গেলে হাসপাতালে যাওয়া জরুরি নয়। এর সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং সচেতনতার অভাব ও অবহেলার কারণে আমাদের মূলত ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার বেড়ে যাচ্ছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন