প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিকের সব শাখায় ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষাও বাধ্যতামূলক করতে হবে। গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে এসব দাবি জানায় ইসলামিক স্টাডিজ ফোরাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলনও এসব দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ইসলামি শিক্ষায় মৌখিক পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত ‘সংকট আবর্তে ইসলাম শিক্ষা : উত্তরণ কর্মকৌশল’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর মো. ছানা উল্লাহ। সঞ্চালনায় ছিলেন ড. আবদুল আজিজ ও উপাধ্যক্ষ মো. আবদুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন এবং প্রধান আলোচক ছিলেন আরবি-ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শামসুল আলম।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ। এই দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নাগরিকের ধর্ম ইসলাম। অন্যান্য ধর্মের নাগরিকগণও ধর্মপ্রাণ। কিন্তু রাষ্ট্রে নাগরিক ও নতুন প্রজন্মের জন্য জাতীয় শিক্ষানীতি ও ব্যবস্থায় শিক্ষার কোনো স্তরেই ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ গুরুত্ব ও আবশ্যিকভাবে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা নেই। নাগরিকরা ধর্মশিক্ষা নানা সোর্স থেকে শেখে। ফলে অশিক্ষা কুশিক্ষা কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে ধর্মান্ধতা ও উগ্রতার উন্মেষ ঘটে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ধর্ম ও নৈতিকতায় অজ্ঞ থেকে সমাজ এবং রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে অনৈতিকতা ও অবক্ষয়ের সয়লাব ঘটায়। এই নৈতিক অবক্ষয় রোধ এবং ধর্মীয় নৈতিক সমাজ ও রাষ্ট্র পরিগঠন এবং নৈতিকতায় উজ্জীবিত করতে ও রাখতে শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিকভাবেই কারিকুলাম ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু দাবি উত্থাপন করা হয়। উল্লেখযোগ্য দাবির মধ্যে রয়েছেÑ প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রাথমিক তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আরবি বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ আইসিটির মতো ১০০ নম্বরের একটি বিষয় বাধ্যতামূলকভাবে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ‘ইসলাম শিক্ষা’ বিষয়টি উচ্চমাধ্যমিক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে মানবিক শাখায় নৈর্বাচনিক এবং বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে পাঠ্যভুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
¯œাতক পাস কোর্স, স্নাতক অনার্স ও স্নাতকোত্তর স্তরের সব বিষয়, সাবজেক্ট, ডিসিপ্লিন এবং প্রোগ্রামে তথা কলা, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মেডিকেল ও প্রযুক্তিগত সব কোর্স ও ডিসিপ্লিনে ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ ন্যূনতম ১০০ নম্বরের ১টি বিষয় আবশ্যিকভাবে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সব কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে ইসলাম শিক্ষা বিষয় এবং ডিগ্রি ও মাস্টার্সে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় ও বিভাগ খুলতে হবে এবং সব সরকারি ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ ও বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন