শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ১২:২১ এএম

রূপনগরে আগুন

গুদামে বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা ১৪৯ পিপিএম

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ১২:২১ এএম

গুদামে বিষাক্ত গ্যাসের  মাত্রা ১৪৯ পিপিএম

  • মুহূর্তেই অচেতন হয়ে মৃত্যুর ঝুঁঁকি
  • ৭ কোটি টাকার কেমিক্যাল ছিল গুদামে। পানি ছিটিয়ে পাতলা করে বের করা হচ্ছে
  • মামলার চার দিন পার হলেও গ্রেপ্তার নেই

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদামের ভেতরে বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গুদামের ভেতরে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের মাত্রা ছিল ১৪৯ পিপিএম। এই গ্যাস কোথাও ১০০ পিপিএমের বেশি থাকলে মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে অচেতন হয়ে মারা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের দল নেতা সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান। এদিকে গোডাউনে সাত কোটি টাকার বিভিন্ন রকমের কেমিক্যাল ছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে এসব কেমিক্যাল পুড়ে গেছে। ফলে ফায়ার সার্ভিস পানি ছিটিয়ে ভস্মীভূত স্তূপ পাতলা করছে এবং ড্রেনেজ সিস্টেম করে বের করে দিচ্ছে। মর্মান্তিক এই অগ্নিদুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহতের ঘটনায় মামলা হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় ডিএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের ১২ সদস্য গ্যাস ডিটেকটর ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে গুদামের ভেতরে যান। গুদামে কী ধরনের বিষাক্ত গ্যাস রয়েছে, তা নির্ধারণ করেন তারা। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বলেন, গ্যাস ডিটেকটর দিয়ে গুদামের বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আমরা হাইড্রোজেন সালফাইড, যেটা টক্সিক একটা গ্যাস এবং মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর, সেটার ফাইন্ডিংস পেয়েছিলাম ২০ পিপিএমের ওপরে, এটাও ডেঞ্জারাস। গতকাল আমি ভেতরে পেয়েছি ১৪৯ পিপিএম। ১০০ পিপিএমের ওপরেই যেটা তাৎক্ষণিকভাবে জীবনের জন্য বিপজ্জনক। এ ছাড়া আশপাশে প্রচুর বিষাক্ত উপাদান বাতাসে রয়েছে। আশপাশে অন্তত ১৫০-৩০০ মিটার এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া ভালো। আর যেদিকে বাতাস যাবে, সেদিকে অন্তত দেড় কিলোমিটার মানুষ সরিয়ে নিতে পারলে ভালো।

গুদামের ভেতরে এখনো অনেক রাসায়নিকের বস্তা পড়ে আছে জানিয়ে মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বলেন, গুদামের বাইরে হাইড্রোজেন সালফাইডের মাত্রা ৭০-৮০ পিপিএমের মতো। বৃহস্পতিবার কার্বন মনো-অক্সাইডের উপস্থিতি আমরা পাইনি। কিন্তু গতকাল গুদামে ৩ পিপিএম পেয়েছি।

ঘটনাস্থলের আশপাশে কাউকে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, উৎসুক মানুষ ও অনেক নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা ভিড় করছেন। তাদের প্রতি সহানুভূতি আছে। তবে মাথায় রাখতে হবে, এটা সাধারণ কোনো আগুন নয়, কেমিক্যালের আগুন। এর আশপাশে যাওয়া যাবে না। কাছে গেলেই এটা কোনো না কোনোভাবে বিপজ্জনক হতে পারে। আমরা প্রাপ্ত তথ্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করেছে। তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।

এদিকে পুড়ে ভস্মীভূত হওয়া কেমিক্যাল স্তূপে পানি ছিটিয়ে পাতলা করছে ফায়ার সার্ভিস। এরপর লাইন করে সেসব পরিবেশের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটকে গতকাল এমনটি করতে দেখা গেছে। তবে গোডাউনে সাত কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম। নীতিমালা অনুযায়ী, একটি গোডাউনে এক ধরনের কেমিক্যাল থাকার বিধান রয়েছে বা ছাড়পত্র অনুযায়ী কেমিক্যাল রাখতে হবে।  

মর্মান্তিক এই অগ্নিদুর্ঘটনায় ১৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বুধবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক ছানোয়ার হোসেনের ভাই সাইফুল ইসলাম। মামলায় আলম কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক শাহ আলমসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

জানতে চাইলে রূপনগর থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

এদিকে পুড়ে অঙ্গার ১৬টি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষায় নমুনা ম্যাচ করার পর মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরই মধ্যে নিহতদের পরিবারের কাছ থেকে নমুনা নিয়েছে সিআইডি।  

জানতে চাইলে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব পরীক্ষক শুভ জয় বৈদ্য বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) ল্যাব বন্ধ থাকার কথা থাকলেও শুধুমাত্র ১৬টি মরদেহের পরিচয় শনাক্তের জন্য আমাদের ল্যাব চালু ছিল। অন্যান্য কাজ বন্ধ রেখে পরিচয় শনাক্তকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মরদেহের দাবিদারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা হচ্ছে। তবে কত দিন সময় লাগতে পারে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!