জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাষ্ট্র যখন নিয়েছে, তখন তা নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল শুক্রবার শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে বিএনপি দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে গেছে। শহিদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ তথা ৩৬ জুলাইয়ের ঘটনা মূলত গত ১৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ। ছাত্র ও জনতার মিলিত গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে। এখন দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে আছে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের দিকে। সেই সনদে স্বাক্ষর করতে কারা যাচ্ছেন, কারা যাচ্ছেন না এবং এটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবেÑ এসব নিয়েই মানুষের আগ্রহ।’ জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সনদ বা কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে কারো মনে শঙ্কা বা ভীতির কোনো কারণ নেই যে এটি ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত হবে না।’
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘এখন জাতীয় সংসদ না থাকলেও প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডারে অনেক সিদ্ধান্ত জারি হচ্ছে, যেগুলো পরবর্তী সংসদে রেটিফিকেশনের প্রয়োজন হবে।’
গতকাল ডিপ্লোমা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডি-ম্যাব) নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন অধ্যাপক জাহিদ। এনসিপির জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি প্রায় আট মাস ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা চালিয়েছে। আজ (গতকাল) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের আমন্ত্রণে সেই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পত্রিকায় ও সামাজিক মাধ্যমে দেখেছি, একটি দল (এনসিপি) অংশগ্রহণ করবে না বলেছে। তবে তারা এটাও জানিয়েছে যে, পরবর্তী সময়ে যদি ডাকা হয়, তখন তারা যোগ দিতে পারে এবং চাইলে স্বাক্ষরও করতে পারে। অর্থাৎ তারা পুরোপুরি আসছে নাÑ ঘটনাটা তেমন নয়। তাদের কিছু দাবি ও বাস্তবতার মধ্যে হয়তো অমিল আছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা স্বাধীনভাবে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন