গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকেরা দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ সময় শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের এএ ইয়ার্ন মিলস্ কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় দুপুর পৌনে ১টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শ্রমিকেরা বলেন, গত কয়েক মাস যাবৎ সঠিক সময়ে বেতন দিচ্ছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলে আন্দোলন বন্ধ হয়। সে সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল যে, গত সোমবার থেকে পুরোদমে কারখানা চালু হবে। কিন্তু সোমবার কর্মস্থলে এসে দেখি মূল ফটকের সামনে কারখানা অনির্দিষ্টকাল বন্ধের নোটিশ। এরপর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ আমাদের আশ্বাস দেয় যে, মঙ্গলবার (গতকাল) ১০টার দিকে কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। এর পরপরই শ্রমিকেরা রাস্তায় নামেন। রাস্তায় নামার পরপরই পুলিশ এসে কোনো কথা না বলে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
শ্রমিক জুটন বলেন, ‘হঠাৎ করে কিছু না জানিয়ে কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করল। আমাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করল না। দীর্ঘদিন ধরে এ কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছি। কয়েক মাস ধরে বেতন পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা করছে। এখন আন্দোলনের জেরে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য দাবি পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘২৩ অক্টোবর শ্রমিকেরা বেতন দাবির সময় কারখানার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেন। ফলে কারখানা চালু রাখা সম্ভব নয়। মালিকপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ধারা ১৩(১) অনুযায়ী কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

