- পোস্টাল ভোট বিডি মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধিত সব ভোটারের কাছে পর্যায়ক্রমে ব্যালট পেপার পাঠাবে ইসি
পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিলেই কেবল হবে না। ভোটারকে একটি ঘোষণাপত্রও সই করতে হবে, অন্যথায় তার ভোটটি অবৈধ বলে গণ্য হবে। পোস্টাল ব্যালট ভোটিং নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে। সংস্থাটির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা পরিপত্রে পোস্টাল ভোটিংয়ের নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।
ভোটদানের নিবন্ধন পদ্ধতি : (ক) নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রবাসী ভোটার যে দেশ থেকে ভোট দিতে ইচ্ছুক, কেবল সেই দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে, (খ) পোস্টাল ব্যালট প্রাপ্তি এবং ভোট প্রদানের জন্য গুগল প্লে স্টোর/এপ স্টোর থেকে পোস্টাল বিডি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে, (গ) ব্যবহারকারী বাংলা/ইংরেজি যেকোনো একটি ভাষা নির্বাচন করে অ্যাপে নিবন্ধনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্দেশাবলি সম্পর্কে জানতে পারবেন, (ঘ) আবেদনকারী নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধন করবেন। ঙঞচ, খরাবষরহবংং ও ঘওউ যাচাইপূর্বক আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে, (ঙ) বিদেশে ব্যালট প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে নির্ভুল ঠিকানা প্রদান আবশ্যক।
রিটার্নিং কর্মকর্তার পাঠানো প্যাকেটে যা থাকবে :
পোস্টাল ভোট বিডি মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধিত সব ভোটারের কাছে পর্যায়ক্রমে ব্যালট পেপার পাঠাবে ইসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত ভোটাররা প্রদত্ত ঠিকানায় নির্বাচন কমিশনের পাঠানো পোস্টাল ব্যালটসহ খাম পাবেন।
খাম পাওয়ার পরপরই ভোটার পোস্টাল ভোট বিডি মোবাইল অ্যাপে লগইন করে খামের ওপর প্রদত্ত কিউআর কোডটি স্ক্যান করবেন। এতে তিনি যে ব্যালট পেপারটি হাতে পেয়েছেন, তা সিস্টেমে শনাক্ত হবে।
ভোটাররা নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত বহির্গামী খামে একটি পোস্টাল ব্যালট সংবলিত খামের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট পেপার, এক পাশে ভোট প্রদানের নির্দেশাবলি এবং অপর পাশে ঘোষণাপত্র সংবলিত একটি পৃথক কাগজ এবং একটি ফেরত খাম পাবেন; যেখানে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা মুদ্রিত থাকবে।
ভোট দিয়ে ডাকযোগে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাতে হবে : (ক) পোস্টাল ভোটিং প্রক্রিয়ায় পাঠানো ব্যালট পেপারে সব প্রতীক মুদ্রিত থাকবে, যার প্রতিটি প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘর রয়েছে। ভোট দেওয়ার আগে ভোটাররা নির্দেশনাপত্র পড়ে ঘোষণাপত্রে যথাযথভাবে ব্যালট পেপারের ক্রমিক নং, ভোটারের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে প্রদত্ত স্থানে স্বাক্ষর করবেন। নিরক্ষর/অক্ষম ব্যক্তি অন্য একজন বৈধ ভোটারের সাহায্যে এর সংশ্লিষ্ট অংশ পূরণ করে সত্যায়ন করে স্বাক্ষর করবেন। এই ঘোষণাপত্র/সত্যায়নপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ছাড়া ব্যালট পেপারটি বৈধ হিসাবে গণ্য হবে না।
(খ) প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হলে অ্যাপের মাধ্যমে অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভোটারগণ অবগত হবেন।
ভোট প্রদানের জন্য ভোটাররা চড়ংঃধষ ঠড়ঃব ইউ মোবাইল অ্যাপে লগইন করে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং নির্দেশিকায় দেওয়া পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারে মুদ্রিত প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক (✓) চিহ্ন কিংবা ক্রস (দ্ধ) চিহ্ন দেবেন। চড়ংঃধষ ঠড়ঃব ইউ মোবাইল অ্যাপে ভোটদান পদ্ধতির ভিডিও টিউটোরিয়াল বা ডিজিটাল কনটেন্ট থাকবে।
(গ) পোস্টাল ব্যালট পেপারে ভোটার ভোট চিহ্নিত করার পর শুধু ব্যালট পেপারটি ছোট খামে রেখে খামটি বন্ধ করবেন, অতঃপর উক্ত ব্যালট পেপার সংবলিত খামটি এবং স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রটি রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা মুদ্রিত খামে প্রবেশ করিয়ে তা বন্ধ করে বন্ধকৃত খামটি ডাকযোগে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উভয় খামই সেলফ-অ্যাডহেসিভ যুক্ত থাকবে, ফলে সেলফ-অ্যাডহেসিভ অংশের উপরিভাগের টেপটি খুলে নিলেই খাম বন্ধ হবে। খামটি পাঠানোর জন্য কোনো ডাকমাশুল প্রেরককে প্রদান করতে হবে না। এটি সরকারের পরিশোধিত থাকবে।
পোস্টাল ভোট গণনা শুরু করার আগপর্যন্ত প্রাপ্ত পোস্টাল ব্যালট পেপারগুলোই কেবল গণনার আওতায় আসবে।
(ঘ) নির্বাচন কমিশন হতে কেন্দ্রীয়ভাবে পোস্টাল ব্যালট ভোটারের নিকট প্রেরণের পর হতে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট ফেরত আসা পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াটির বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যালটের অবস্থান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ভোটারগণও স্ব-স্ব মোবাইল হইতে চড়ংঃধষ ঠড়ঃব ইউ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে নিজ ব্যালটের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
রিটার্নিং অফিসারের ব্যালট গ্রহণ ও সংরক্ষণ :
রিটার্নিং অফিসার ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালটের খামসমূহ প্রাপ্তির পর তার ওপর প্রদত্ত ছজ কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে প্রাপ্ত রেকর্ড রাখবেন, যা পোস্টাল ব্যালট বিতরণ ও প্রাপ্তি তালিকা হিসাবে সফটওয়্যার হতে জেনারেট হবে। সফটওয়্যার হতে জেনারেট করা এই ফরমে রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষর করবেন।
যথাযথ স্বাক্ষরবিহীন ঘোষণাপত্র/ঘোষণাপত্রবিহীন ব্যালটের খাম বাতিল/অবৈধ বলে সংরক্ষণ করবেন রিটার্নিং অফিসার। আর যথাযথ স্বাক্ষরযুক্ত ঘোষণাপত্র সংবলিত ব্যালটের খামগুলো গণনার জন্য আলাদা বাক্সে সংরক্ষণ করা হবে, যা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার নির্ধারিত বাক্সে সংরক্ষণ করবেন। পোস্টাল ব্যালট পেপার গণনার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি গণনাকক্ষ প্রস্তুত করা হবে। পোস্টাল ভোট গণনার সময় প্রার্থী/নির্বাচনি এজেন্ট/প্রার্থীর প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, পর্যবেক্ষকেরা অন্যান্য কেন্দ্রের ন্যায় একই নীতিমালা অনুসরণে উপস্থিত থাকতে পারবেন।
রিটার্নিং অফিসার পোস্টাল ভোট প্রদানের নিমিত্তে ডেভেলপকৃত সফটওয়্যারে লগইন করার পর সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসনের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রদত্ত ভোটের সামগ্রিক চিত্র দেখতে/জানতে পারবেন।
যে পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাপ্ত ব্যালট পেপার গণনা করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা :
(ক) রিটার্নিং অফিসার ব্যালট পেপার সংবলিত খামগুলো গণনার জন্য বাক্স খুলবেন এবং একের পর এক ব্যালট পেপার সংবলিত খাম খুলে ব্যালট পেপার বের করবেন। বৈধ ব্যালট পেপারসমূহ প্রার্থীভিত্তিক আলাদা করবেন এবং তা গণনা করবেন।
(খ) যে সমস্ত পোস্টাল ব্যালটে কোন প্রার্থীর অনুকূলে ভোট প্রদান করা হয়েছে, তা সঠিক বোঝা না যায়, সেগুলো অবৈধ/বাতিল ব্যালট হিসেবে আলাদা করবেন।
(গ) প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণ ভোটকেন্দ্রের মতো লিপিবদ্ধ করে এর কপি প্রকাশ করবেন।
(ঘ) পোস্টাল ব্যালট গ্রহণের সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পর যদি কোন পোস্টাল ব্যালট পেপার সংবলিত খাম রিটার্নিং অফিসারের নিকট পৌঁছায় সেক্ষেত্রে প্রাপ্ত পোস্টাল ব্যালটসমূহ রিটার্নিং অফিসার/দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গ্রহণের তারিখ ও সময় উল্লেখসহ স্বাক্ষর-পূর্বক সংরক্ষণ করবেন এবং এ সংখ্যা প্রকাশ করবেন।
পোস্টাল ব্যালট পেপার গণনা শেষ হলে অন্যান্য সাধারণ কেন্দ্রের মতো পোস্টাল ব্যালটের ফলাফল ঘোষণা করে সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা সাধারণ ভোটকেন্দ্রের ফলাফলের পাশাপাশি পোস্টাল ব্যালটে প্রাপ্ত ভোটের হিসাব ঘোষণা ও অন্যান্য কেন্দ্রের ফলাফলের সাথে একত্রীকরণ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করবেন। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ভোটের হিসাব একীভূত না করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন