সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম

নবীজির (সা.) ধৈর্য ও নম্রতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম

নবীজির (সা.) ধৈর্য ও নম্রতা

নবীজি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর মদিনা ধীরে ধীরে আরবের গুরুত্বপূর্ণ শহর হয়ে ওঠে। প্রতিদিন আরবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ মদিনায় আসত। কেউ ব্যবসার জন্য, কেউ আত্মীয়-স্বজনদের দেখতে, কেউ জীবিকা ও প্রয়োজনীয় পণ্যের খোঁজে মদিনায় আসত। আবার অনেকে আসত ইসলামের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে। ইসলামের দাওয়াত তখন আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল। নবীজিকে (সা.) দেখতে, তার কথা শুনতে, ইসলাম সম্পর্কে জানতে, শিখতেও মানুষ মদিনায় আসত।


একদিন মদিনায় আসেন এক বেদুইন বা মরুবাসী ব্যক্তি। তিনি নিজের গোত্রে থাকাকালীন কারো কাছে দাওয়াত পেয়ে ইমান এনেছিলেন। কিন্তু ইসলামের আদর্শ ও শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান তার ছিল না।


মদিনায় এসে মদিনার পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে তিনি আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদ দেখেন। সেখানে গিয়ে নামাজ আদায় করার ইচ্ছা হয়। তিনি মসজিদে প্রবেশ করেন এবং আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ করার পর তিনি আল্লাহর এই নেয়ামতের কথা স্মরণ করেন যে, আল্লাহর রাসুলের মাধ্যমে তিনি ইসলামের আলো পেয়েছেন। এ কথা ভেবে তিনি হাত তুলে দোয়া করেন, হে আল্লাহ! আমাকে ও মুহাম্মদকে রহম করুন, আমাদের সঙ্গে কাউকে এতে শরিক করবেন না।


তার এই দোয়া ছিল অন্তরের সংকীর্ণতার পরিচায়ক, সব মুসলমানদের জন্য কল্যাণ কামনা ও আল্লাহর রহমত প্রার্থনার যে শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে তার বিপরীত। সাহাবিরা এ দোয়া শুনে বিস্মিত হন এবং আল্লাহর রাসুলের (সা.) প্রতিক্রিয়া দেখার অপেক্ষা করেন। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে তার ভুল সংশোধন করেন। নম্র ভাষায় তাকে বলেন, ‘তুমি তো আল্লাহর সীমাহীন রহমতকে সংকীর্ণ করে ফেলেছ।’


নবীজির (সা.) ধৈর্য ও নম্রতা
এ ঘটনার পর বেদুইন ব্যক্তিটি মসজিদ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ তার প্রস্রাবের প্রয়োজন হলে তিনি সরল স্বভাব অনুযায়ী মসজিদের এক পাশে গিয়ে প্র¯্রাব করতে শুরু করেন। সাহাবিরা তার এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে বাধা দিতে উদ্যত হন। কিন্তু আল্লাহ রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের থামিয়ে দেন এবং বলেন, তাকে প্রশ্রাব শেষ করতে দিন, প্র¯্রাব শেষে হলে তার ওপর পানি ঢেলে দেবেন।


সাহাবিরা প্রচ- ক্ষুব্ধ হওয়া সত্ত্বেও থেমে যান। বেদুইনের আচরণে তারা যতই বিরক্ত হন না কেন, আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ তাদের থেমে যেতে বাধ্য করে।
বেদুইন যখন প্র¯্রাব শেষ করেন, তখন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে বলেন, তুমি কি মুসলিম নও? বেদুইন বলেন, হ্যাঁ, আমি মুসলিম। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তাহলে তুমি কেন মসজিদে প্র¯্রাব করলে?
বেদুইন উত্তর দেন, আল্লাহর কসম! আমি ভেবেছিলাম সাধারণ কোনো জায়গার মতোই এখানেও প্র¯্রাব করা যায়।


আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে কোমলভাবে বলেন, মসজিদ প্র¯্রাব ও অপবিত্রতার জায়গা নয়। মসজিদ আল্লাহকে স্মরণ করার, নামাজ আদায়ের এবং কোরআন পাঠের জায়গা।


বেদুইন আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই দয়া ও কোমল আচরণে গভীরভাবে প্রভাবিত হন। পরে তিনি বলেছিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ধমক দেননি, শাস্তি দেননি, বরং কোমলভাবে শিক্ষা দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি, মুসনাদে আহমদ)।
এই ঘটনায় আল্লাহর রাসুলের (সা.) আচরণ থেকে আমরা ধৈর্য, নম্রতা, মানুষকে হেদায়াত করার ও শিক্ষা দেওয়ার কৌশল শিখতে পারি। শত্রু-মিত্র সবার সঙ্গেই নবীজির (সা.) আচরণ ছিল অত্যন্ত মার্জিত ও সুন্দর। নবীজির (সা.) আচরণে মুগ্ধ হয়ে তার চরম শত্রুও মিত্র হয়ে যেত, ইসলাম গ্রহণ করতো। নবীজি (সা.) বলতেন, আল্লাহ তায়ালা নম্র ব্যবহারকারী। তিনি নম্রতা পছন্দ করেন। নম্রতার মাধ্যমে তিনি যা দান করেন, কঠোরতা বা অন্য কোনো পন্থায় তা দান করেন না। (সহিহ মুসলিম)।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!