মানুষ শান্তিময় ও নিশ্চিত জীবন পেতে কত কিছুই না করে। একটু শান্তির আশায় মানুষ নিজের জীবনকে জ্বলন্ত অঙ্গার বানিয়ে দেয়। সুখের পেছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ একসময় দুনিয়া থেকেই চলে যায়। কিন্তু কাক্সিক্ষত সেই শান্তি, বিশ্রাম আর কয়জনই পায়।
তাই মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও বরকতের জন্য দোয়া করা। প্রকৃত কল্যাণময় জীবন তারাই পায়, মহান আল্লাহ যাদের দান করেন। নি¤েœ এমন কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো- যেগুলো মানুষের জীবনকে কল্যাণময় করে
১. ঈমান আনা: পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’ (সুরা: বাকারাহ, আয়াত: ২৫)
২. তাকওয়া অবলম্বন করা: মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি সেসব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত, তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ (সুরা: আরাফ, আয়াত: ৯৬)
৩. তাওয়াক্কুল করা: অর্থাৎ আল্লাহর ওপর ভরসা করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি তাওয়াক্কুল করে মহান আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা: তালাক, আয়াত: ৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হতে তাহলে পাখিদের যেভাবে রিজিক দেওয়া হয়, সেভাবে তোমাদেরও রিজিক দেওয়া হতো। এরা সকালবেলা খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে।’
(তিরমিজি, হাদিস: ২৩৪৪)
৪. অল্পে তুষ্ট হওয়া: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ধনের আধিক্য হলে ধনী হয় না, অন্তরের ধনীই প্রকৃত ধনী। (বুখারি, হাদিস: ৬৪৪৬)
৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা: আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বীয় রিজিক বৃদ্ধি ও দীর্ঘজীবী হতে চায় সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখে। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৬৯৩)
৬. সদকা করা: পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন।’ (সুরা: বাকারাহ, আয়াত: ২৭৬)
৭. নিয়ামতের শুকরিয়া করা: মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা কৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমি তোমাদের আরও বেশি দেব আর অকৃতজ্ঞ হলে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি তো কঠোর।’ (সুরা: ইবরাহিম, আয়াত: ৭)
৮. ইস্তিগফার করা: পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর বলেছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি মহাক্ষমাশীল, তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন এবং তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা।’ (সুরা: নুহ, আয়াত: ১০-১২)
৯. নিজের চেয়ে কম সম্পদশালীদের দেখা: আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের চেয়ে কম সম্পদশালী মানুষদের প্রতি (পার্থিব ব্যাপারে) দৃষ্টি দিয়ো, তোমাদের চেয়ে ধনশালী মানুষদের দিকে নয়। এতে তোমাদের আল্লাহ তাআলার দেওয়া নিয়ামত নগণ্য মনে হবে না। (তিরমিজি, হাদিস: ২৫১৩)
১০. অন্যের জন্য দোয়া করা: আবু দারদা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলিম বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করলে একজন ফেরেশতা তার জবাবে বলে, ‘আর তোমার জন্য অনুরূপ।’ (মুসলিম, হাদিস: ৬৮২০)
১১. ঘরে প্রবেশের সময় সালাম করা: আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, হে বৎস! তুমি যখন তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে যাও, তখন সালাম দিয়ো। তাতে তোমার ও তোমার পরিবার-পরিজনের কল্যাণ হবে। (তিরমিজি, হাদিস: ২৬৯৮)
আপনার মতামত লিখুন :