অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার ঝুঁকি এড়িয়ে বৈধভাবে কাজের সুযোগ পেতে আগ্রহী তর”ণদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস (Employment Permit System) প্রোগ্রাম এখন এক নির্ভরযোগ্য গন্তব্য। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর শত শত বাংলাদেশি শ্রমিক দক্ষতা ও ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন কোরিয়ার নানা শহরে।
কী এই ইপিএস প্রোগ্রাম?
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার পরিচালিত ইপিএস প্রোগ্রাম ২০০৪ সালে চালু হলেও বাংলাদেশ এতে যুক্ত হয় ২০০৮ সালে। বাংলাদেশ সরকার এবং কোরিয়ার এইচআরডি কোরিয়া যৌথভাবে এই কর্মসূচি পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে বৈধভাবে দক্ষ শ্রমিকদের দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন খাতে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর সার্বিক তত্ত্বাবধান করে বিএমইটি।
কোন খাতে কাজের সুযোগ?
বাংলাদেশের নাগরিকরা সাধারণত পাঁচটি খাতে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের সুযোগ পাচ্ছেন খাতগুলো হলো- ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে ফ্যাক্টরি শ্রমিক, যন্ত্রপাতি অপারেটর, প্যাকেজিং হিসেবে, কৃষি ও পশুপালনকারী খামার শ্রমিক, গবাদি পশুর পরিচর্যাকারী হিসেবে অনেক চাহিদা আছে কাজের, মাছের একটা বিরাট বাজার আছে সেখানে মাছ ধরার ট্রলার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করার জন্য অনেক লোকের দরকার পরে, নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে রাস্তা ও বিল্ডিং নির্মাণকারীর কাজের বিরাট সুযোগ, হোটেল ও ক্লিনিং সেক্টরে অনেক লোকের দরকার পরে।
আবেদন প্রক্রিয়া ও শর্তসমূহ
নি¤œলিখিত শর্তগুলো সাধারণত প্রযোজ্য: ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে (Korean Language Test / EPS?TOPIK)
আবেদনকারীদের একটি কোরিয়ান ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা দিতে হয়, সেটা ঊচঝ প্রক্রিয়ার অংশ।
শারীরিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নির্ধারিত স্বাস্থ্য মানদ পূরণ করতে হবে।
যোগ্যতা ও দক্ষতা: যদিও EPS-TOPIK (Test of Proficiency in Korean) কাজের জন্য, তবুও কিছু ক্ষেত্রে কাজের ধরন ও দক্ষতা বিবেচনা করা হয়।
চুক্তি ও বাধ্যবাধকতা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি নির্ধারিত সময়ের চুক্তি (যেমন ৩ থেকে ৫ বছর) থাকতে পারে। চুক্তি শেষে আবার রিনিউ করার সুযোগ থাকতে পারে নির্দিষ্ট শর্তে।
কর্মস্থল পরিবর্তন: অনেক সময় কর্মীকে একই নিয়োগদাতার অধীনে থাকতে হবে; পরিবর্তন করা সীমিত বা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকতে পারে।
কীভাবে নির্বাচন হয় প্রার্থীরা?
দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার আগে প্রার্থীদের অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হয় (Korean Language Test / EPS?TOPIK) ভাষা পরীক্ষায়। এরপর এইচআরডি কোরিয়া প্রার্থীদের নাম non-specialized-এ অন্তর্ভুক্ত করে, যেখানে দক্ষিণ কোরিয়ান নিয়োগকর্তারা সরাসরি প্রার্থী বাছাই করেন।
নির্বাচনের ধাপসমূহ:
প্রথমে কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা (ঊচঝ-ঞঙচওক) দিতে হবে এরপর ঔড়ন জড়ংঃবৎ-এ তালিকাভুক্তি হতে হবে তারপর প্রার্থীকে চাকরি নির্বাচনের পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিতে হবে এরপর মিলবে কাক্সিক্ষত ভিসা তারপর প্রশিক্ষণ শেষে প্রবাসে গমন সম্পন্ন হবে।
বেতন ও সুযোগ-সুবিধা
দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের বেতন তুলনামূলকভাবে বেশ আকর্ষণীয়। গড় বেতন মাসিক ১.৩ থেকে ১.৮ মিলিয়ন কোরিয়ান ওয়ন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ থেকে ১.৪ লাখ টাকা।
সুযোগসুবিধা
বিনা মূল্যে আবাসন পাওয়া যায় অনেক ক্ষেত্রে সঙ্গে আছে- স্বাস্থ্য বিমা, ওভারটাইম সুবিধা, পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ।
কে আবেদন করতে পারবেন?
বয়স: ১৮-৩৯ বছর
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ
কমপক্ষে এসএসসি পাস
কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই
EPS-TOPIK পরীক্ষায় উত্তীর্ণ
সরকারি আদেশ
BMET ও এইচআরডি কোরিয়া বারবার আবেদনকারীদের দালাল ও প্রতারকদের থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, কোনো দালাল ছাড়াই সরকারিভাবে আবেদন করলেই কোরিয়া যাওয়া সম্ভব। আরও তথ্য ও আবেদনের জন্য বিএমইটি ওয়েবসাইট: িি.িনসবঃ.মড়া.নফ ও ঐজউ কড়ৎবধ ইধহমষধফবংয ঙভভরপব এ যোগাযোগ করতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস প্রোগ্রাম শুধু বিদেশে কাজ নয়, এটি বাংলাদেশের হাজারো পরিবারের অর্থনৈতিক মুক্তির এক নতুন জানালা। সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিলে, ভাষা পরীক্ষায় সফল হলে এবং সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করলে আপনি-ও হতে পারেন পরবর্তী সফল প্রবাসী। নোট: পরবর্তী EPS-TOPIK পরীক্ষার সম্ভাব্য সময়সূচি জানতে নিয়মিত ভিজিট করতে হবে BMET I HRD Korea ওয়েবসাইট।