ছোট পর্দা থেকে ক্যারিয়ার শুরু। এরপর বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। মা শতরূপা সান্যাল টলিপাড়ার নামকরা পরিচালক হওয়া সত্ত্বেও ঋতাভরী নিজেকে প্রমাণ করেছেন তার অভিনয়ের জোরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় এই নায়িকা। কয়েক বছর আগেও তার মেদহীন ফিগারের প্রেমে পড়তেন পুরুষেরা। তবে এখন তার ওজন বেড়েছে, যদিও আত্মবিশ্বাসে ভাঁটা একটুও পড়েনি। কিভাবে সকলের ললিতা হয়ে উঠেছিলেন আর তারপর জীবন কতটা বদলেছে, সবটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাগ করলেন নায়িকা।
সম্প্রতি ঋতাভরী তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের কিছু অদেখা ছবি শেয়ার করেন। তখন তিনি কিশোরী, সল্টলেকের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন। স্কুলে পড়তে পড়তেই লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে প্রবেশ ঋতাভরীর। এই ছবিগুলিতে কিশোরী ঋতাভরীর মিষ্টি মুখ দেখে মুগ্ধ তার অনুরাগীরা। মেকআপ ছাড়া কিশোরী ঋতাভরী কখনও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, কখনও স্কুল ইউনিফর্ম পরে ড্রাইভিং শিখছেন। তবে এর মধ্যেও দু-তিনটি ছবিতে দেখতে পাওয়া গেছে অভিনেত্রীর প্রথম অভিনীত ধারাবাহিক ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ধারাবাহিকের মুহূর্ত। এই ছবিগুলি পোস্ট করে ঋতাভরী তার জীবনের ওঠা-পড়া, ট্রোলিং, কটাক্ষ সবটা নিয়ে দীর্ঘ লেখা লিখেছেন।
ঋতাভরী লেখেন, একটা সময়ে আমি কিশোরী ছিলাম, যার দু’চোখে ছিল স্বপ্ন, ডানা মেলে ওড়ার ইচ্ছে। আমি নিজের জীবন নিজের শর্তে চালাই এবং নিজের বাড়াবাড়ির জন্য কখনও ক্ষমা চাইব না। তারপর একদিন সব কিছু বদলে গেল, আমি হলাম তোমার ললিতা। তোমাদের ভালোবাসা আমার জীবনকে করে তুলেছিল এক রূপকথার মতো।
অভিনেত্রী লেখেন, একটা দিন এমন আছে যখন মনে হয় আমি একটি কাঁচের প্রাসাদে আটকে দিয়েছি, সবাই আমাকে বিচার করতে থাকে। তবুও আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।
অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর ঋতাভরী বাস্তবকে চিনতে শিখেছেন। ঋতাভরী লেখেন, অবিচার, বিচার সমালোচনা, অপারেশন, শরীর নিয়ে বিদ্রুপ কোনও কিছুই আমাকে ভাঙতে পারেনি। কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু ভেঙে পড়িনি।
অভিনেত্রীর কথায়, হয়তো ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছেন তিনি। কিন্তু কখনও মচকে যাননি। শক্তি জড়ো করে হাসিমুখে উঠে দাঁড়িয়েছেন। সবশেষে ঋতাভরী লেখেন, হার মানা তার অভিধানে নেই। তাই তিনি কোথাও যাচ্ছেন না।
ঋতাভরী ধীরে ধীরে বাঙালির বং ক্রাশ বা কুইন হয়ে উঠেছেন, যা তিনি গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। পেশাগত জীবনের চেয়ে ঋতাভরীর ব্যক্তিগত জীবন নিয় কাঁটাছেঁড়া বেশি হয়েছে। কখনও তার সম্পর্ক নিয়ে, কখনও ব্রেকআপ নিয়ে আবার কখনও বা তাকে বডি শেমিংয়ের মতো পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে। কিন্তু ঋতাভরী ভেঙে না পড়ে বার বার উঠে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
ঋতাভরী এই মুহূর্তে পরিচালক প্রতিম ডি গুপ্তের একটি সিরিজে অভিনয় করছেন। সেখানে তার সহ-অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। যার সঙ্গে তার প্রথম কাজ ধারাবাহিক ‘ওগো বধূ সুন্দরী’। সব মিলিয়ে সকলের প্রিয় ললিতা এখন ৩৩ বছরের পরিণত নারী। যিনি শিখেছেন জীবনে কীভাবে উঠে দাঁড়াতে হয়।