ঢাকা বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

বরগুনার মনিরুলের অভিনব বিদ্যুৎ উৎপাদন

তাপস মাহমুদ, বরগুনা
প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০২:১৩ এএম

বরগুনা সদর উপজেলার পুরাকাটা গ্রামে স্লুইসগেটের মুখে পানি প্রবেশের তীব্র স্রোত কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক ব্যতিক্রমী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন মনিরুল ইসলাম। নিজস্ব নকশায় তৈরি এই যন্ত্র স্থানীয় ওয়ার্কশপেই বানানো হয়েছে। আর পানির ধাক্কায় টারবাইনের মতো ঘুরে বিনা খরচে উৎপাদন করছে বিদ্যুৎ।

দিনে দুবার পায়রা নদীর জোয়ারে ভরে ওঠে স্লুইসগেটের দুই প্রান্ত। ঠিক সেই সময়ই মনিরুলের যন্ত্র প্রাণ পায়, আর তার উৎপাদিত বিদ্যুতে একসঙ্গে জ্বলছে অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক লাইট। স্থানীয়দের কাছে এটি শুধু প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়, এ যেন প্রকৃতির শক্তিকে হাতের মুঠোয় আনার এক জীবন্ত উদাহরণ।

মনিরুল জানান, মাত্র তিন মাসের প্রচেষ্টায় এবং ৭০ হাজার টাকা খরচে এই উদ্ভাবনী পদ্ধতি তৈরি করেছেন তিনি। পেশায় তিনি জ্বালানি তেল বিক্রেতা, কিন্তু বিদেশি তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ভাবনা থেকেই তার এই উদ্যোগ। মনিরুলের হিসাব অনুযায়ী, জোয়ারের প্রবাহ থাকলে দিনে প্রায় ১৫-১৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

‘পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে দেশের যেকোনো স্থানে, যেখানে পানির স্রোত আছে, সেখানেই এই প্রযুক্তি কাজে লাগানো যাবে। বিনা পয়সায় গ্রামের পর গ্রাম আলোকিত হয়ে উঠতে পারবে।’ আশাবাদী কণ্ঠে বললেন উদ্ভাবক মনিরুল ইসলাম।

এই উদ্যোগে সহায়তা করেছেন স্থানীয় মেকানিক জাহিদ। তিনি বলেন, ‘স্লুইসের ভেতরে সঠিক মাপ বুঝিয়ে দেওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পেরেছি। এটি সত্যিই এক নতুন অভিজ্ঞতা।’

গ্রামের মানুষও উচ্ছ্বসিত। তারা মনে করছেন, কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই কৌশল সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে দেশে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।