শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:৫৪ পিএম

শুরুটা বাণিজ্যিক সিনেমা দিয়ে করতে চাই

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:৫৪ পিএম

শুরুটা বাণিজ্যিক সিনেমা দিয়ে করতে চাই

এ প্রজন্মের ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মাফতুহা জান্নাত জিম। নাচের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। কাজ করেছেন বিজ্ঞাপনচিত্রেও। বছরখানেক ধরে অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছেন এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নাটকে আলোচনায় এসেছেন জিম। ব্যস্ততা ও ক্যারিয়ার ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি

নাচ থেকে অভিনয়

অভিনয়ে নাম লেখানোর আগে বিটিভি, এনটিভি ও আরটিভিতে নাচ করতাম। নাচে কিছু কিউট চেহারা থাকলে শিশুশিল্পী হিসেবে বিজ্ঞাপনের জন্য বলা হতো। তারা বিজ্ঞাপনের অডিশনের জন্য আমন্ত্রণ জানাত। আম্মু সবসময় আমার পাশে থাকতেন এবং এ ধরনের প্রস্তাবে আম্মুও আগ্রহ প্রকাশ করলেন। আমার আগে থেকেই বিজ্ঞাপন করার আগ্রহ ছিল। পরে বিজ্ঞাপনের অডিশন দিই এবং নির্বাচিত হই। এরপর ইউনিসেফের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের বিজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করি। সেই বিজ্ঞাপনটি তখন সেরা ১০টির মধ্যে একটি ছিল। তারপর বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন করি। এরপর জয়া আহসান আপুর ‘দেবী’ সিনেমায় ছোট একটি দৃশ্যে কাজ করি। এর পর ধীরে ধীরে আমার অভিনয় জগতে যাত্রা শুরু হয়।

সাপোর্ট

পরিবারের মধ্যে আমার মা এবং দুই বোন ছাড়া ওইভাবে কেউ সাপোর্ট করেনি। আমার পরিবার রক্ষণশীল প্রকৃতির। আমার চাচা-ফুপুরা সবাই হাজী পরিবার। ওই জায়গা থেকে নাচ করাটা আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। তার ওপর আবার নাচের পাশাপাশি টেলিভিশনে কাজ করাটাও আরও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমার ফুফুরা বাজে মন্তব্য করত। তারা বলত, ‘আপনার মেয়েকে নর্তকী বানাচ্ছেন’ ইত্যাদি। আমার বাবা ফুফুদের পাল্লায় পড়ে আমাকে সাপোর্ট করত না। তিনি চিন্তা করতেন রেজাল্ট খারাপ হবে। কিন্তু তিনি মনে মনে ঠিকই পছন্দ করতেন। আমার কোনো নাচের অনুষ্ঠান টিভিতে দেখালে তিনি এক ঘণ্টা আগে টিভি ছেড়ে বসে থাকতেন খবর দেখার উসিলায়। তিনি আমার নাচ দেখতেন এবং তার সহকর্মীদের ফোন দিয়ে সময়সূচি বলে দিত।

ক্যামেরার সামনে

প্রথমবার যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই তখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়তাম। অনেক ছোট ছিলাম। আমার মা আমাকে সবকিছু শিখিয়ে দিত। আমি সেভাবেই হুবহু অনুসরণ করতাম। আমার মা শুটিংয়ের সময় অনেক নার্ভাস হয়ে যেত। আমি একদমই নার্ভাস ছিলাম না। কারণ ছোট থেকেই আমি অনেক সাহসী। নাচ করতাম স্টেজে। যে কারণে সাহসটা বেড়েছিল। অভিনয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিখিনি। যদিও এখন আমি নাট্যকলায় পড়ছি।

রুহি চরিত্র

সম্প্রতি আমার অভিনীত ‘দোষটা কার’ নাটকে রুহি চরিত্রে অভিনয় করে বেশ সাড়া পেয়েছি। তবে এই চরিত্রের জন্য সেভাবে কোনো প্রস্তুতি নেইনি। চরিত্রটা ঠিকভাবে বোঝার জন্য গল্পটি কয়েকবার পড়ে শুটিং যাই। আমার কাছে মনে হয়েছিল ওই চরিত্রটা এমনভাবে করব যেন দর্শকদের কাছ থেকে দুইটা গালি খেতে পারি। গালি না খেলে ওই ধরনের নেগেটিভ চরিত্রগুলো সার্থকতা থাকে না। যতটুকু সম্ভব আমি চেষ্টা করেছিলাম। সত্যিই আমি বুঝতে পারিনি এটা এত সাড়া ফেলবে। এটা আমার জন্য খুবই আশ্চর্যজনক ছিল। আমার খুবই ভালো লেগেছিল।

বুনোফুল ও মেঘবালিকা

নাটক দুটি ছিল আমার একদম শুরুর দিকে। ২০২৪ থেকে নিয়মিত কাজ শুরু করি। শিশুশিল্পী হিসেবে যখন আমার পদার্পণ হয় তখন আমি টুকটাক কাজ করেছি পড়ালেখার পাশাপাশি। অভিজ্ঞতা খুব ভালো ছিল। আমার সহশিল্পীরা সবাই আমার থেকে সিনিয়র ছিল। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি।

ধারাবাহিক ও একক নাটকের পার্থক্য

দুটাই আমার খুব আবেগপ্রবণ জায়গা। ধারাবাহিক নাটক ‘যতœ’ দিয়ে নতুনভাবে নিজেকে তৈরি করা শিখেছি। ওইটা আমার আলাদা আবেগপ্রবণ জায়গা। ‘যতœ’ ধারাবাহিক নাটকের সঙ্গে একক নাটকের কোনো পার্থক্য আমি করব না। ধারাবাহিক নাটক আমার হৃদয়ে আছে। আমার কাছে সব কাজই ভালোলাগে, কিন্তু ‘যতœ’ নাটকের ক্ষেত্রে আমার কোমল দিকটা উঠে আসে। কারণ ওইটা আমার জীবনের প্রথম ধারাবাহিক নাটক। ওই নাটকের চরিত্রের মাধ্যমে দর্শকরা আমাকে নতুনভাবে চিনেছে।

পড়াশোনা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি নাট্যকলা বিভাগে পড়াশোনা করছি। মঞ্চ আর ক্যামেরার সামনে অভিনয় দুইটা আকাশ-পাতাল তফাৎ। নাট্যকলা একটা মানুষের মূল ভিত্তিটা শক্ত করে। আমরা বিভিন্ন ইতিহাস পড়ছি, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারছি, জ্ঞানবৃদ্ধি হচ্ছে এটাই। 

চরিত্রের প্রস্তুতি

চরিত্রে প্রবেশ করার জন্য আমি কয়েকবার গল্পটি পড়ি। যে চরিত্র থাকে আমি সেই চরিত্রে নিজেকে চিন্তা করি। সেখানে আমি জিম থাকলে চলবে না। চরিত্র ধারণ করার জন্য আশপাশের মানুষদের আচরণ লক্ষ্য করতে হয়। আমাদের সমাজে পাগল থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষদের লক্ষ্য করি, তারা কীভাবে কি করছে। 

অভিনয়ে নাচ কতটা সাহায্য করছে?

নাচ অভিব্যক্তির দিক থেকে পুরোপুরি সাহায্য করছে। নাচ এবং অভিনয়ে দুটো গভীরভাবে জড়িত আমার কাছে মনে হয়। কারণ, নাচে যে ৯টি অভিব্যক্তি রস পড়েছি, অভিনয়ও কিন্তু একই বিষয়। এই নয়টি রস ব্যবহার করি অভিনয় করতে হয়। তাই নাচ এবং অভিনয় দুটোই গভীরভাবে জড়িত। অভিব্যক্তি প্রকাশের অনেক সাহায্য করে।

বড় পর্দা

সিনেমায় কাজ করার আগ্রহ অবশ্যই আছে কিন্তু সেটা এখন নয়। এর মাঝে যদি ভালো গল্প, ভালো নির্মাতা এবং ভালো কাজ হয় তাহলে অবশ্যই করব। তবে বাণিজ্যিক সিনেমা দিয়েই চলচ্চিত্রের পথচলা শুরু করতে চাই।

নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

আগামী পাঁচ বছরে আমি নিজেকে দর্শকদের কাছে একজন ভালো মানুষ হিসেবে দেখতে চাই। চাই দর্শকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেতে। কেউ যেন আমার নাম শুনলেই চিনতে পারে এবং বলতে পারে, ‘হ্যাঁ, উনি আমার প্রিয়শিল্পী।’ দর্শকদের আন্তরিক ভালোবাসা পেতে চাই। আমি শাবনূর আপুর মতো হতে চাই।

শখ-আগ্রহ কি?

আমি ঘুরতে খুব পছন্দ করি। যদিও ওইভাবে সময় পাই না। যদি সময় পাই তাহলে অবশ্যই ঘোরাফেরা করা পছন্দ করি। গান, নাচ ও ছবি আঁকতে পছন্দ করি। ছবি আঁকা কারো কাছ থেকে শিখিনি, এটা সৃষ্টিকর্তার উপহার বলা যায়।

সমালোচনা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো সমালোচনার শিকার হয়নি। আর নেতিবাচক মন্তব্য আসলে তা আমি চোখে দেখি না। এগুলো দেখা উচিতও না। আমি ডিলিট করে দেই। আর যদি মানুষ সামনাসামনি নেতিবাচক মন্তব্য করে, ওইগুলোও আমি গুরুত্ব দেই না। আমি একটা বিষয় দিনশেষে মানি, আমি আলোচনায় আসছি তাই আমাকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। আলোচনায় না আসলে তো আমাকে নিয়ে কেউ সমালোচনা করবে না। এটা একটা পজিটিভ দিক।

স্বপ্নের চরিত্র

আমি ইল্যুশন ধরনের চরিত্রে কাজ করতে করতে চাই। যেমন আমি কল্পনার জগতে আছি, আবার আমি নাই। এই ইল্যুশন চরিত্রগুলোই ভালো লাগে। সুযোগ পেলে অবশ্যই করব।

মেকআপ ছাড়া অভিনয়

‘৬২ ঘণ্টা’ নামে একটি নাটকে ইতোমধ্যে মেকআপ ছাড়া অভিনয় করেছি। নাটকটি দ্রুতই প্রকাশ পাবে। নাটকটিতে মেকআপ ছাড়াই দর্শক আমাকে দেখতে পাবে।

ওটিটি ভাবনা

সবার মতো আমিও ওটিটিতে কাজ করতে চাই। ওটিটিতে কাজ করা সবারই স্বপ্ন থাকে। বড় পর্দায় যেমন স্বপ্ন থাকে ওটিটিও তেমন স্বপ্ন থাকে। সিনেমার থেকে মানুষ এখন বেশি ওটিটির কাজই দেখে। আমারও ইচ্ছা আছে ওটিটিতে কাজ করার। এখনো সুযোগ হয়নি। খুব শিগগিরই হয়তো সুযোগ হবে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!