মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে জবরদখল করে গড়ে তোলা লেবু ও আনারস বাগান উচ্ছেদ করেছে বন বিভাগ। গত শনিবার বিকালে শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক ও লাউয়াছড়া বন রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষকের নেতৃত্বে বনকর্মীদের অভিযাযানে বাঘমারা বন ক্যাম্পের পূর্ব দক্ষিণ দিকে এ অভিযান চালিয়ে ৩ একর বনভূমি উদ্ধার করে লেবু গাছ উপড়ে ফেলে সেখানে বনজ গাছের চারা রোপণ করা হয়।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালেল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ভানুগাছ বনভূমির ১২৫০ হেক্টর বনভূমি নিয়ে গড়া হয়েছিল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। এরপর এ উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্ব পায় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। বন্যপ্রাণী ব্যস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ বন্যপ্রাণী ও এ বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা স্থানীয় বন গ্রামবাসী, বনকর্মী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করার পরও আজ পর্যন্ত এ বনের গাছ গাছালি, বন্যপ্রাণী ও জমি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফরেস্ট গ্রামবাসীরা জানান, বিগত ১৫-২০ বছর ধরে এ বনের জমি সঠিকভাবে জরিপ করে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ১২৫০ হেক্টর জমি বের করার আলোচনা হয়। তবে কাজের কাজ কিছুই হয় না। মাঝে মধ্যে অভিযান করে বনের ভেতর গড়ে তোলা অবৈধ ঘর ভেঙে ফেলা ও লেবু বাগান উচ্ছেদ করা হয়। এর চেয়ে বেশি কিছু হয় না। গ্রামবাসীরা আরও বলেন, যখন রাজনৈতিক দল ক্ষতায় থাকেন তখন তাদের কিছু নেতৃবৃন্দের ছত্র-ছায়ায় একটি প্রভাবাশালী মহল বনের জমি দখল করে লেবু বাগান গড়ে তুলে।
ওই বনভূমি উদ্ধার অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতির সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজরের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জামিল হোসেন, শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সকল, স্থানীয় বন টহল দলের সদস্য (সিপিজি)।
উদ্ধার অভিযান বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতির সংরক্ষণ বিভাগের শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক বলেন, বন বিভাগ ও পুলিশের সমন্বয়ে লাউয়াছড়া বনের দখল হওয়া প্রায় তিন একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে, উদ্ধারকৃত জায়গায় বন বিভাগ নতুন ফলজ ও বনজ চারা রোপণ করবে। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনিক সার্বিক সহায়তায় আসলে সঠিক ও জোরালোভাবে জরিপ করে লাউয়াছড়া উদ্যানের ১২৫০ হেক্টর জমি নির্ধারণ করতে হবে।