রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের বিল ছাড় না দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন ঠিকাদাররা। তারা বলেছেন, যথাযথ কারণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে বিল অনুমোদন বন্ধ রেখেছেন রাসিক সচিব রুমানা আফরোজ। এই অচলাবস্থা নিরসন না হলে আগামী ২৩ জুলাই থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সব উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গতকাল রোববার সকালে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ‘রাজশাহীর সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাসিক ঠিকাদারবৃন্দ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঠিকাদার তরিকুল ইসলাম স্বপন। তিনি বলেন, ‘সচিব রুমানা আফরোজ যোগ দেওয়ার পর থেকেই সেবাগ্রহীতাদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। বিলের ফাইল মাসের পর মাস আটকে রাখা হচ্ছে, কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া। ঠিকাদাররা সচিবের কক্ষে গেলে অসদাচরণ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক প্রকল্পের কাজ বিল না পাওয়ায় থেমে গেছে, কোথাও কোথাও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে যানজটসহ জনভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি সরকারের ভাবমূর্তির জন্য হুমকি।’
এ ছাড়া অভিযোগ করা হয়, সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার খামখেয়ালিপনার কারণে রাসিককে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে দেরি হওয়ায় আড়াই লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। তারা নিয়মিত অফিসে আসেন না এবং নাগরিক সমস্যার সমাধানে আগ্রহী নন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিন-চার দিনের মধ্যে নিষ্পত্তিযোগ্য ফাইল মাসের পর মাস পড়ে থাকে। এমনকি অবসরে যাওয়া কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রেও স্বাক্ষর করেন না সচিব।’
নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও সচিব রুমানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হয়রানি ও দাপ্তরিক অচলাবস্থার অভিযোগ তোলা হয়। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, হোল্ডিং নম্বর, এনওসি ও ট্রেড লাইসেন্স পেতে সাধারণ মানুষকে মাসের পর মাস ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সচিব রুমানার অপসারণ এবং রাসিকে স্থায়ী প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানান। দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৩ জুলাই থেকে সব উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ এবং ২৭ জুলাই নগর ভবনের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বেলাল খান, তৌহিদুল ইসলাম সেলিম, আজিজুল হক ভূঁইয়া, গাজী সালাহউদ্দীন, ইয়াহিয়া খান মিলু, রেজাউল ইসলাম, মো. আমিন ও মো. শওকত প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :