উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যার আশঙ্কায় এরই মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে রংপুরের গঙ্গাচড়া, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার শতাধিক চরের বাসিন্দাদের মধ্যে। নদী তীরবর্তী ফসলি জমিগুলোয় পানি ঢুকতে শুরু করেছে। অনেক স্থানে শাকসবজি ও ধানের চারা তলিয়ে গেছে।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, গতকাল ভোর থেকে উজানের ঢলের কারণে পানি বাড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পানি বাড়ার গতি অব্যাহত থাকায় তা যেকোনো সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। চরের মানুষদের আগাম সতর্ক করা হয়েছে। পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে থাকলেও আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজ থেকে হঠাৎ পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণেই মূলত তিস্তা অববাহিকায় হঠাৎ বন্যার সৃষ্টি হয়। নদীপাড়ের বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া বলেন, ‘আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। খরা, বন্যা আর নদীভাঙনের সঙ্গে লড়েই বেঁচে আছি। বর্ষায় গজলডোবার গেট খুলে দিলে আমাদের ভাসিয়ে দেয়, আর শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ রাখে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি ব্যাপক হারে বেড়েছে। চরের বহু ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। মানুষজন আতঙ্কে রয়েছে।’
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বন্যা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে চরের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :