শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী (রাঙ্গামাটি)

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম

রাজস্থলীতে বৌদ্ধদের মিলনমেলা ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা

উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী (রাঙ্গামাটি)

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মহান দানোত্তম কঠিন চীবর দান ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত। রূপালী বাংলাদেশ

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মহান দানোত্তম কঠিন চীবর দান ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত। রূপালী বাংলাদেশ

রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর ও পুণ্যময় পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব, ৪৪তম মহান দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে রাজস্থলী কেন্দ্রীয় মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই মহতী ধর্মীয় আয়োজনে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো বৌদ্ধ ভিক্ষু, দায়ক-দায়িকা ও পূণ্যার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সকাল থেকেই ভক্তবৃন্দের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো বিহার এলাকা। পিন্ডদান, সংঘদান, চীবর দানসহ বিভিন্ন দান কর্মসূচির মাধ্যমে দিনব্যাপী চলে উৎসবের নানা আনুষ্ঠানিকতা।

প্রথম পর্বে প্রাতঃকালীন সময়ে অনুষ্ঠিত হয় পিন্ডদান ও সংঘভোজন। পরবর্তীতে বিকেলে পূণ্যার্থীরা পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। জগতের সকল জীবের সুখ, শান্তি ও মঙ্গল কামনায় পাঠ করা হয় মঙ্গলাচরণ ও বিশেষ প্রার্থনা। এ ছাড়াও অনুষ্ঠিত হয় অষ্টপরিষ্কার দান, পানীয় দান, বুদ্ধমূর্তি দান, চীবর দান, কল্পতরু দানসহ নানাবিধ দান কার্যক্রম।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উঃ কিত্তিমা মহাথের, অধ্যক্ষ, চুশাক পাড়া বৌদ্ধ বিহার। প্রধান আশীর্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথেরো, অধ্যক্ষ, রাজস্থলী কেন্দ্রীয় মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার। ধর্মদেশক হিসেবে দেশনা প্রদান করেন ভদন্ত উত্তমা নন্দ থেরো, অধ্যক্ষ, সোনাইছড়ি বৌদ্ধ বিহার। এ ছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উঃ ইন্দোবাসা মহাথেরো, অধ্যক্ষ, হ্নারামুখ পাড়া বৌদ্ধ বিহার। অনুষ্ঠানের স্বাগতম বক্তব্য রাখেন রাজস্থলী মৈত্রী বিহারের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি তচংগ্যা।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মহান দানোত্তম কঠিন চীবর দান ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত। রূপালী বাংলাদেশ

বক্তারা বলেন, চীবর দান শুধুমাত্র একটি দান নয়, এটি হলো আত্মশুদ্ধি, সহমর্মিতা ও পরম দয়ার প্রতীক। এই দানের মাধ্যমে মানুষ পরার্থে নিজের সামান্য শ্রম ও ভালোবাসা উৎসর্গ করে সত্যিকারের পুণ্যের স্বাদ অনুভব করে।

উৎসব শেষে অংশগ্রহণকারী ভিক্ষু ও পূণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে আশীর্বাদ প্রদান করেন ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথেরো। তিনি বলেন, ‘মানবজীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হলো মনকে পরিশুদ্ধ করা। চীবর দানের মাধ্যমে আমরা পরার্থে দানের মহিমা উপলব্ধি করতে পারি, যা সকল জীবের মঙ্গল ও শান্তি বয়ে আনে।’

আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান নারী উপাসিকা বিশাখা মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি, রং করা, বয়ন ও সেলাই করে একটি চীবর (বিশেষ পরিধেয় বস্ত্র) তৈরি করে দান করেছিলেন। সেই দানের ঐতিহ্য আজও ‘কঠিন চীবর দান’ হিসেবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে আসছেন।

পাহাড়ি জনপদের রাজস্থলীর শান্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত এবারের ৪৪তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য হয়ে উঠেছে এক অন্যন্য ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনের প্রতীক, যেখানে ধর্মীয় ভক্তি, দানশীলতা ও মানবতার আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে রাজস্থলীর কেন্দ্রীয় মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!