পাহাড়, সমুদ্র, ঝরনা, চা বাগান সবই একসঙ্গে দেখতে যেতে চান? যদি সেটি হয় আমাদের দেশেই! এমন এক জায়গা আছে খুব বেশি দূরে নয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথেই রয়েছে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরপুর বাঁশখালী উপজেলা। একদিনের ট্যুর বা ছোট কোনো ছুটির দিনে মনের ক্লান্তি দূর করতে এটি হতে পারে সেরা গন্তব্য।
সবুজের বুকে বাঁশখালী চা বাগান
চায়ের শহর বললেই আমাদের মনে পড়ে সিলেটের শ্রীমঙ্গলের কথা। কিন্তু চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলাতেও রয়েছে দৃষ্টিনন্দন একটি চা বাগান, বাঁশখালী চা বাগান, যেটি স্থানীয়ভাবে চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগান নামেও পরিচিত। পাহাড়ের ঢালুতে সারি সারি চা গাছ যেন সবুজের কারুকাজে সাজানো এক প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। সকালের কুয়াশায় ঢাকা চা গাছ, গাছের ফাঁকে ফাঁকে আলোছায়ার খেলা আর পরিশ্রমী চা শ্রমিকদের হাসিমুখ সব মিলিয়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্য উপহার দেয় এই বাগান। দেশের প্রথম সারির চা উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর একটি এই বাগান বর্তমানে সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে। এখানকার ক্লোন চা বিদেশেও রপ্তানি হয়। শীতকাল এলে চা বাগানের মনোরম আবহে ভিড় জমে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের।
একদিনেই পাহাড়, চা বাগান আর সমুদ্র এমন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেশে খুব কম জায়গাতেই সম্ভব। প্রকৃতিপ্রেমী, ফটোগ্রাফার কিংবা পরিবার নিয়ে ঘুরতে চাওয়া যে কেউ এখানে পাবেন একদিনের প্রশান্তি, যা দীর্ঘদিন মনে থাকবে। চট্টগ্রামের কোলে লুকিয়ে থাকা এই বাঁশখালী যেন এক জীবন্ত চিত্রকর্ম যেখানে সবুজের সঙ্গে নীলের মেলবন্ধন। তাই সময় পেলেই একদিনের জন্য ছুটে আসুন বাঁশখালীতে। প্রকৃতির কোলে কাটানো কয়েকটি ঘণ্টা আপনাকে ফিরিয়ে দেবে নতুন উদ্যমে, নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণায়।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা বা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম শহরে আসতে হবে। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল বা নতুন ব্রিজ থেকে চাঁদপুরগামী বাসে উঠুন (ভাড়া প্রায় ৮০ টাকা)। চাঁদপুর বাজারে নেমে ২০০ টাকায় ট্যাক্সি রিজার্ভ করে চলে যেতে পারেন বাগানে। চাইলে নতুন ব্রিজ থেকে সরাসরিও ট্যাক্সি রিজার্ভ করতে পারেনÑ ভাড়া আনুমানিক ৪০০-৫০০ টাকা।
নির্জন সমুদ্রসৈকত
বাঁশখালী সমুদ্রসৈকত, যা বাহারছড়া সৈকত নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সৈকত। কক্সবাজারের মতো পর্যটকের ভিড় এখানে নেই, তাই নির্জনতা ও প্রশান্তির খোঁজে আসা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এটি এক স্বর্গীয় জায়গা।
ঝাউবনে ঘেরা সৈকতের পথে হেঁটে যেতে যেতে শোনা যায় ঢেউয়ের গর্জন, দেখা যায় সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য। তীরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের সঙ্গে আসে ঝিনুক, শামুক আর নানা রঙের ছোট ছোট পাথর, যা সৈকতকে করে তোলে আরও বর্ণিল।
কীভাবে যাবেন
চট্টগ্রাম শহরের নতুন ব্রিজ বা বহদ্দারহাট থেকে গুনাগরি বাজারগামী বাসে উঠুন (ভাড়া প্রায় ১০০ টাকা)। গুনাগরি থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভ করে যেতে পারেন বাঁশখালী সমুদ্রসৈকতে, ভাড়া আনুমানিক ২৫০-৩০০ টাকা।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন