শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ময়দানে ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫, ০২:৩৩ এএম

জেমিমার কান্নাভেজা আনন্দ মাঠে

ময়দানে ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫, ০২:৩৩ এএম

জেমিমার কান্নাভেজা আনন্দ মাঠে

নারী বিশ^কাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ৩৩৮ রান তাড়া করে জিতে বিশ^ রেকর্ড গড়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত। তাদের এই ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বীরত্ব দেখান জেমিমা রদ্রিগেজ। ১২৭ রানের অপরাজিত ম্যাচ বিজয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। ৫ উইকেটের স্মরণীয় জয়ে ভারত বিশ^কাপ থেকে বিদায় করে দেয় টুর্নামেন্টের ফেভারিট ও রেকর্ড সাতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে। এই ম্যাচে জেমিমা ক্রিজে যান শেফালি ভার্মার বিদায়ের পর। সেখান থেকেই দলকে টেনে নেন শেষ পর্যন্ত। সোয়া তিন ঘণ্টার অসাধারণ লড়াই করেন। ম্যাচ জয়ের পর নাভি মুম্বাইয়ের ২২ গজ সিক্ত হয়েছে জেমিমার চোখের জলে। তার মাঠময় উদযাপন, ডাগআউটে ফেরার পর সতীর্থদের আলিঙ্গনÑ সবকিছুতেই ছিল কান্নাভেজা সুখ। সেই আনন্দাশ্রুর পেছনের গল্পও তিনি শুনিয়েছেন। চোখধাঁধানো সব কাট, ড্রাইভ, স্কুপ শটে গড়া ইনিংসটি একদম সুযোগবিহীন ছিল না। ৮২ রানে ক্যাচ দিয়েছেন, সহজতম সেই ক্যাচ ফেলে দেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ও বিশে^র সেরা কিপারদের একজন অ্যালিসা হিলি। ১০৬ রানে আবার সুযোগ দেন। এবার সহজ ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন তাহলিয়া ম্যাকগ্রা।
জেমিমার মতে, এসব ওপর থেকেই লেখা হয়েছে! তিনি স্রেফ লড়াই চালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ফিফটি বা সেঞ্চুরির ব্যাপার ছিল না, আজকে (বৃহস্পতিবার) ছিল স্রেফ ভারতকে জেতানোর ব্যাপার। জানি, কয়েক দফায় জীবন পেয়েছি। তবে মনে হয়েছে, সবকিছুই ঈশ্বরের চিত্রনাট্য। আমি বিশ^াস করি, সঠিক তাড়না নিয়ে কেউ সঠিক কাজ করলে তিনি (ঈশ^র) সব সময়ই সহায় হন। আমার মনে হয়েছে, যা কিছু হয়েছে, সবকিছুই আসলে এসবকে ফুটিয়ে তোলার জন্যই। এই মাস খুব কঠিন ছিল আমার জন্য। এখন সবকিছু মনে হচ্ছে স্বপ্নের মতো, সয়ে উঠতে সময় লাগবে।’ মাসটি তার জন্য কতটা কঠিন ছিল, বুঝতে ফিরে যেতে হবে একটু পেছনে। গত বিশ^কাপে তিনি ভারতীয় দলে জায়গা পাননি। এবার বিশ^কাপের আগে বেশ ভালো ফর্মে ছিলেন। তার কাছে দলের প্রত্যাশা ছিল অনেক। নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা তো ছিলই। সেই প্রত্যাশাই হয়তো তাকে চাপে ফেলে দেয়। বিশ^কাপ অভিষেকে আউট হন প্রথম বলেই। পরের ম্যাচে ৩২ রান করতে পারলেও তৃতীয় ম্যাচে আবার আউট শূন্য রানে। চতুর্থ ম্যাচে দারুণ শুরুর পরও আউট হয়ে যান ৩৩ রানে। পরের ম্যাচে তাকে একাদশের বাইরে রাখে ভারত। মাঠের বিবর্ণ রূপের সঙ্গে ছিল মাঠের বাইরের লড়াই। মানসিক অবসাদ তাকে চেপে ধরেছিল। সেই লড়াই থেকে মুক্তির গল্পও তিনি শোনালেন এদিন। পাশাপাশি জানালেন ঈশ^রের প্রতি কৃতজ্ঞতা। জেমিমা বলেন, ‘গতবার বিশ^কাপ থেকে আমি বাদ পড়েছিলাম। এবার বিশ^কাপ এলো, ভাবলাম, ‘ঠিক আছে, চেষ্টা করব কিছু দেখানোর।’ কিন্তু একের পর এক কিছু হতেই থাকল এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি। তবে আমার পাশে অসাধারণ সব মানুষ ছিল, যারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টের প্রায় প্রতিটি দিন আমি কান্না করেছি। মানসিকভাবে ভালো ছিলাম না, অনেক উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। একাদশ থেকে বাদ পড়াটাও আমার জন্য ছিল আরেকটা চ্যালেঞ্জ। এরপর আমি স্রেফ চেয়েছিলাম নিজেকে মেলে ধরতে, বাকিটা ঈশ্বর সব সামলে নিয়েছেন।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ বাদ পড়ার পর তাকে আবার একাদশে ফেরানোর জয় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচটি কার্যত ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। সেই ম্যাচে তাকে নামানো হয় ৩ নম্বরে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আগে তিন দফায় ৩ নম্বরে ব্যাট করে তার রান ছিল মোট ১৩। এবার একাদশে ফেরার ম্যাচে চার বছরের বেশি সময় পর তিনে নেমে তিনি খেললেন ৫৫ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ভারত। তবে সেমিফাইনালে তার নামা নিশ্চিত ছিল না। সাধারণত ৫ নম্বরে ব্যাট করে থাকেন তিনি। এই ম্যাচেও তেমনটিই ধরে রেখেছিলেন তিনি। যখন জানতে পারলেন তিনে নামতে হবে, মানসিকভাবে তৈরি হওয়ার সময় খুব একটা ছিল না। কিন্তু দলকে জেতানোর তীব্র তাড়নায় তিনি ঠিকই তৈরি হয়ে যান। জেমিমা বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ৫ নম্বরে ব্যাট করব। আলোচনা যখন চলছিল, আমি শাওয়ার নিতে চলে যাই। তখন বলে গিয়েছিলাম, ‘আমাকে জানিয়ো।’ মাঠে নামার মিনিট পাঁচেক আগে জানতে পারি, আমাকে ৩ নম্বরে খেলতে হবে। তবে নিজের কথা ভাবিনি আমি। নিজেকে প্রমাণ করার ব্যাপার আমার কাছে ছিল না। ভাবনায় কেবল ছিল ভারতকে ম্যাচ জেতানো। কারণ গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে আমরা বারবার হেরেছি। আমি তাই চেয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে বৈতরণি পার করাতে।’ ইনিংসের শেষ দিকে জেমিমাকে স্পষ্টই ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। একপর্যায়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলছিলেন। ম্যাচের পর তা খোলাসা করলেন ২৫ বছর বয়সি তারকা। তিনি বলেন, ‘একটা পর্যায় পর্যন্ত আমি স্রেফ খেলছিলাম, নিজের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তবে শেষ দিকে বাইবেলের বাক্য পড়ছিলাম, কারণ শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম এবং ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছিলাম প্রায়। তবে সেই স্তবকে বলা হয়েছে, ‘স্রেফ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকো, ঈশ্বরই তোমার হয়ে লড়াই করবেন।’ আজকে সেটিই হয়েছে, তিনিই লড়াই করেছেন আমার হয়ে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!