গাজীপুরের অন্যতম শিল্পনগরী শ্রীপুর উপজেলার প্রায় ৪৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ২০০০ সালে গঠিত হয় শ্রীপুর পৌরসভা। শুরুতে ‘গ’ শ্রেণির হলেও পরবর্তীতে এটি উন্নীত হয় ‘ক’ শ্রেণিতে। তবে পৌরসভার এই উন্নয়ন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকলেও বাস্তবে নাগরিক সুবিধা তেমন একটা বাড়েনি। বরং নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত হয়ে পড়েছে পুরো পৌর প্রশাসন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বরাদ্দের টাকা সঠিকভাবে কাজে না লাগিয়ে দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় পৌরসভার মেয়র থেকে শুরু করে নি¤œ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও গড়ে তুলেছেন বিশাল সম্পদ। যার ফলে গত ৫ আগস্ট মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক বসানো হলেও দুর্নীতির চিত্রে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।
সবচেয়ে সাম্প্রতিক উদাহরণ- শ্রীপুর-বরমী আঞ্চলিক সড়ক থেকে পৌর ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং কাজ। প্রায় ১ কোটি ১৪ লাখ টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘মেসার্স রানা এন্টারপ্রাইজ’ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু কাজ শুরুর মাত্র ১৪ দিনের মধ্যেই সেই রাস্তায় দেখা দিয়েছে ধস, উঠে যাচ্ছে পিচ, হাত দিয়ে ধরলেই খুলে পড়ছে ঢালাই।
স্থানীয়রা জানায়, কাজের মান ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। মাঝে বেশ কয়েকটি স্থানে গর্ত রেখেই দেওয়া হয়েছে ঢালাই। ডোবা বা পুকুরঘেঁষা স্থানে গাইড ওয়াল না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই এসব স্থানে রাস্তা ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, শুধুমাত্র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নয়, রাস্তার তদারকির দায়িত্বে থাকা পৌরসভার ইঞ্জিনিয়াররাও এই অনিয়মে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে রাস্তার কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি শেষ হলে ঠিক করে দেওয়া হবে।’
অন্যদিকে, একাধিকবার ফোন করলেও মেসার্স রানা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এমদাদুল হক কোনো মন্তব্য দেননি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহেদ আখতার বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়দের প্রশ্ন, তদন্তের নামে সময় ক্ষেপণ করে দায় এড়ানোর চেষ্টা না হয়ে বরং সরাসরি দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পৌরসভার দুর্নীতির লাগাম টানবে কি না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ?
আপনার মতামত লিখুন :