কোথাও পিচঢালাই আছে, কোথাও নেই। খানাখন্দে ভরা সড়কে বৃষ্টির পানি-কাদায় একাকার। দিন দিন এসব খানাখন্দ দিন দিন বড় আকার ধারণ করছে। তাতে প্রতিদিন উলটে পড়ছে যানবাহন। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। আবার কাদা-পানি ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে। এমন দুর্ভোগ আর মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।
সাম্প্রতিক ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি সড়কের এমন বেহাল অবস্থা। আবার কোথাও কোথায় ধসে গেছে সড়ক। পানি কমে যাওয়ার পর খানা-খন্দে ভরা সড়কগুলো চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শিলক-কোদালা ও সরফভাটা মধ্যকার সংযোগ সড়কের হামিদ শরিফ বালিকা বিদ্যালয়ের সম্মুখে বড় অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। উঠে গেছে সড়কের পিচঢালাই, পাথর ও খোয়া। নদীর পাশে হওয়ায় দ্রুত ব্লক ও বাঁধ না দিলে সড়কটির একটি অংশ যেকোনো সময় কর্ণফুলী নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
সম্প্রতি শিলক ইউনিয়নবাসী সড়ক মেরামতের দাবিতে মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্থায়ীভাবে বালির বস্তা দিয়ে কিছু অংশে দেয়াল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু স্থায়ী মেরামত না হওয়ায় সড়কে ফাটল বেড়েই চলেছে। যানবাহন চলাচল এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। অতিবৃষ্টির কারণে শিলক নতুন ব্রিজসংলগ্ন সড়কের একাংশ ভেঙে গেছে। ফলে রিকশা ছাড়া অন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চা-শ্রমিক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য পথচারী ও শত শত যানবাহন চলাচল করে।
এদিকে বেতাগী ইউনিয়নের প্রধান কোর্ট কাম আমিনউল্লা সড়কের পিচঢালাই উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। গোডাউন-পদুয়া কালিন্দীরানী সড়কের নারিশ্চা অংশে ২০ মিটার অংশে শিলক খালের পাড় আগেই থেকে ভাঙা রয়েছে। চলতি বর্ষায় ভাঙন আরও বেড়ে যানবাহন চলাচল মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এটি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার সঙ্গে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যোগাযোগের মূল সড়ক। তা ছাড়া কদমতলীর পানি উন্নয়ন বোর্ড সড়কটি এখন বেহাল অবস্থা। সড়কের কাপ্তাই সংযোগ স্থান মাটি ও ব্রিজ দেবে গেছে। বেশ কিছু পিচঢালাই উঠে গিয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উপজেলার উত্তর রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগর-রানীর হাট ডিসি সড়কের শান্তিনিকেতন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে গোডাউন-পদুয়া কালিন্দীরানী সড়ক, বেতাগী আমিনউল্লা সড়ক, হাজি সৈয়দ আলী সড়কসহ রাঙ্গুনিয়ার অভ্যন্তরীণ বিধ্বস্ত সড়কগুলো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন সড়কগুলোর এমন সমস্যা লেগে থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে যানবাহনসহ স্থানীদের যাতায়াতে খুব কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কগুলো ভয়ংকর রূপ ধারণ করে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম বলেন, সড়ক সংস্কার কাজ চলমান আছে। লোকবল সংকটের কারণে সব কাজ তো আর একসঙ্গে করা যাচ্ছে না, এরপরও খানা-খন্দকগ্রস্ত মেজর সড়কগুলোর সংস্কারের কাজ দ্রুত করে দেব। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন নতুন সড়ক নির্মাণ এবং পুরাতন সড়ক মেরামতের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব পা হলে ক্রমান্বয়ে সব সড়কে উন্নয়ন ও মেরামত করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :