ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

দেড় হাজার পেঁপেগাছ কীটনাশক ছিটিয়ে ধ্বংস

শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০৩:৫৬ এএম

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রাতের আঁধারে হাফিজ উদ্দিন বিশ্বাস নামের এক কৃষকের তিন বিঘা জমির দেড় হাজার পেঁপেগাছে কীটনাশক ছিটিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে স্বপ্নের বাগান গড়েছিলেন কৃষক হাফিজ উদ্দিন। আশা ছিল, অন্তত ২০ লাখ টাকা আয়ের। কিন্তু দুর্বৃত্তের ছোবলে সেই স্বপ্ন এখন ধ্বংসস্তুপে রূপ নিছে। ভুক্তভোগী কৃষক হাফিজ বিশ্বাস উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছরে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে হাফিজ অনেক আশা নিয়ে চলতি মৌসুমে পেঁপে বাগান করেছিলেন। যাতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ গাছ মাথা উঁচু করে উঠেছিল। এর মধ্যে গত শনিবার থেকে হঠাৎ গাছগুলো নুইয়ে পড়তে থাকে, অল্প সময়ের মধ্যেই অর্ধেকের বেশি গাছ মরে যায়, আর বাকি গাছগুলো ক্রমেই ঝলসে যাচ্ছে।

গত রোববার বিকেলে পেঁপেখেতে গিয়ে গাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন কৃষক হাফিজ বিশ্বাস। পচনশীল রাসায়নিক স্প্রে করে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে ভুক্তভোগী ও গ্রামের অন্য কৃষকদের অভিযোগ। কেউ ‘হিংসা’ করে এ ধরনের কাজ করেছেন বলে তারা ধারণা করছেন।

হাফিজ উদ্দিন জানান, তিন বিঘা জমির পেঁপেগাছ পরিচর্যায় তিনি পাঁচ লাখ টাকার বেশি খরচ করেছেন। পেঁপে বিক্রি করে লাভের আশায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এই পেঁপে বাগান তৈরি করেন। তিনি আশা করছিলেন, কোনো অঘটন না ঘটলে প্রায় ২০ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন।

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাফিজ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষ করে আসছেন। এ বছর তিন বিঘা জমিতে ১ হাজার ৫০০ পেঁপেগাছের বাগান তৈরি করেন। ফুল ও ফলে ভরপুর পেঁপেবাগানটি এখন পচনশীল স্প্রে করে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, গাছগুলোয় গ্লাইফোসেট নামক আগাছা দমন করা বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। ৩-৪ দিন আগেই দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে এ বিষ ছিটাতে পারে। এ বাগান থেকে কৃষক হাফিজের আয় হতে পারত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। আমরা তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছি।

শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।