টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয় চলছে তীব্র ওষুধ সংকট। দীর্ঘদিন ধরে এসব ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ না থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে এলেও তাদের খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে। সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা, ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক কিংবা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধও অনেক সময় মজুদ থাকে না।
সখীপুর উপজেলার আড়াইপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধা জয়গন বেগম (৭০) বলেন, ‘হাসপাতালে ওষুধ নাই। বাইর থেইকা কিনতে কইছে। গরিব মানুষ, কিনবো কেমনে? টাকা তো নাই।’
আড়াইপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আবুবকর সিদ্দিক বলেন, পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় তারা রোগীদের বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে নিতে বলছেন, যা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যাদবপুর-বেড়বাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, গত বেশ কিছু মাস ধরে আমাদের ক্লিনিকে সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ না থাকায়, আমাদের সেবা কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘœ ঘটেছে। ওষুধের অভাবে আমরা অসহায়ভাবে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। রোগীদের আমরা শুধু পরামর্শ দিতে পারলেও, প্রয়োজনীয় ওষুধ না দিতে পারায় তাদের ফার্মেসি থেকে কিনে নিতে হচ্ছে, যা অনেক দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে স্বাস্থ্যসেবার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে, আর সরকারের মহতী উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমার বিনীত অনুরোধ, সরকার যেন দ্রুত প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেহেনা পারভীন বলেন, ‘সারা দেশেই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয় ওষুধ সংকট। আমি গত সপ্তাহে কথা বলেছি, আশা করছি আগামী মাসের প্রথম দিকেই ওষুধ চলে আসবে।’
সচেতন ও স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য ভরসাস্থল কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্তু এখন সেখানে গিয়ে প্রাথমিক ওষুধও পাওয়া যায় না। এতে তারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :