পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের আটটি অত্যাধুনিক গণশৌচাগারে এক মাস ধরে তালা ঝুলছে। ইজারা নবায়ন না করা এবং নতুন করে দরপত্র আহ্বান না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাজারো ট্রেনযাত্রী ও স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
নতুন করে ইজারা না দেওয়া হলে তালা খোলার সুযোগ নেই বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দুর্ভোগের শিকার যাত্রীরা বলছেন, আটটি আধুনিক শৌচাগারের প্রতিটির গেটে তালা ঝুলছে। কেউ ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে যাত্রীরা স্টেশনে শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন হলে বিপাকে পড়েন।
ঢাকাগামী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ফরিদা আখতার বৃহস্পতিবার স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, প্ল্যাটফর্মে বসা অবস্থায় প্রয়োজন হলে তিনি টয়লেটের সামনে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখে ফিরে আসেন। তার মতো কয়েকজন যাত্রীর ভাষ্য, প্রতিদিন সকাল ৭টায় রাজশাহীগামী কমিউটার ট্রেনের যাত্রীরা বেশি বিপদে পড়েন। সিনিয়র টিটিই আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠুও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিদিন যাত্রীদের এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অত্যাধুনিক শৌচাগারগুলো নির্মাণ করা হয় তিন বছর আগে ২০২২ সালে। সে সময় ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন ও হস্তান্তর করতে নির্মাণের পর ছয় মাস এগুলো বন্ধ ছিল। পরে এ কার্যক্রম সম্পন্নের পর চুক্তি অনুযায়ী তিন বছর মেয়াদ গত ১ জুলাই শেষ হয়।
নতুন করে দরপত্র ও ইজারা নবায়ন না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে শৌচাগারগুলো বন্ধ রয়েছে। রেলওয়ের ঈশ্বরদী হেডকোয়ার্টারের সিনিয়র টিটিই আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠুর ভাষ্য, প্রতিদিন ব্যস্ততম এ স্টেশন হয়ে ২০-২৫টি যাত্রীবাহী ট্রেন ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে থাকে।
ট্রেনে দীর্ঘ যাত্রাপথে স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের শৌচাগার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। এগুলো বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে অভিযোগ করেন কর্মকর্তাদের কাছে। তারা টয়লেটগুলো খুলে দিতে পারছেন না। যাত্রীদের অভিযোগ, দেশের অন্যতম বড় জংশন স্টেশনে টয়লেট বন্ধ রাখা দুঃখজনক।
একাধিক ঠিকাদারের ভাষ্য, ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদের লোকবল কাজে লাগানোর কোনো সুযোগ নেই। পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নতুন ইজারা চুক্তির শেষ মুহূর্তে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বাতিল করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে তারাও অস্বস্তিতে আছেন। নতুন ইজারা না হওয়া পর্যন্ত টয়লেট নিয়ে তাদের কিছু করার নেই।’